নিজে প্রধান শিক্ষক, স্ত্রী সহকারী প্রধান শিক্ষক, ভাই সহকারী শিক্ষক- এমনভাবে নিজ পরিবারের ১৭ জনকে চাকরি দিয়ে গড়ে তুলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বলছিলাম নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিসামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়ের কথা। যেখানে প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার বিদ্যালয়টিকে পরিবারতন্ত্রে রূপান্তরিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া পর্যন্ত একই পরিবারের ১৭ জন কর্মরত রয়েছেন- এমন একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি ইউনিয়নের কবিরাজের বাজারে অবস্থিত কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রায় এক একর জমির ওপরে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা হয় ২০০২ সালে। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে জমিদাতা কুলোদা মোহন রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হয়।
তৎকালীন সভাপতি কুলোদা মোহন রায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে অনন্ত কুমারকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার নিয়োগ পাওয়ায় পর প্রতিষ্ঠানে নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ভাই, স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনকে নিয়োগ দিতে থাকেন।
পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কুলোদা মোহন রায়ের মৃত্যুর পর প্রধান শিক্ষক নিজের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে বিমল চন্দ্র রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে নিয়ে আসেন। বিপুল চন্দ্র কমিটির সভাপতি হওয়ার পর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দুজনে মিলে দুই পরিবারের লোকজনদের নিয়োগ দেন। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক থেকে শুরু করে আয়া পর্যন্ত মোট ১৭ জন কর্মরত রয়েছেন।
তার মধ্যে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের একজন শিক্ষক ছাড়া বাকিরা সকলেই সনাতন ধর্মের। এর মধ্যে ৫ জন প্রধান শিক্ষকের পরিবারের।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বাংলা এডিশনকে বলেছেন, নিজ পরিবারের বাইরে অত্র এলাকায় কেউ শিক্ষিত নয় বলে তিনি এ কাজ করেছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, এ কাজ করার মাধ্যমে তিনি সাম্প্রদায়িক বা অবৈধ কাজ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামান সরকার নিজেকে এ পদে নতুন দাবি করে কিছু না জানার গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এখানে নতুন। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মৌসুমী হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ওই স্কুলের বিষয়টি আমি দেখেছি। এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। এ ধরণের কেনো অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: