মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় ড্রেন নির্মাণের কাজের সময় শেষ হলেও কাজ হয়েছে অর্ধেকেরও কম। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেছেন স্থানীয়রা যাতায়াতকারিরা।
সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পৌর এলাকার জরিনা কলেজ মোড় থেকে কালীগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাড় পর্যন্ত ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ছয় মাস আগেই রাস্তা খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ৮ আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অর্ধেকের বেশি বাকি রয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে রাখার কারণে ওই পথে গত ছয় মাস ধরে কোনো যান চলাচল করতে পারছে না। আবার হেঁটে যাতায়াতে সময় প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা দ্রুত সময়ের মধ্যে এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইলেও কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি ঠিকাদারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরও।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইমপরটেন্ট আরবান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (আইইউআইডিপি)-২ প্রকল্পের আওতায় যৌথভাবে ১০টি প্যাকেজের কাজ পায় মানিকগঞ্জের রাফি অ্যান্ড রিকা এন্টারপ্রাইজ (জেভি) নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ১০টি কাজের চুক্তিমূল্য ধরা হয় ২ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৬ টাকা। এর মধ্যে জরিনা কলেজ মোড় থেকে কালীগঙ্গা নদীর ঘাট পর্যন্ত ৩৬০ মিটার রাস্তায় আরসিসি পাইপ ড্রেন নির্মাণ ও সেই রাস্তায় বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের দুটি কাজ রয়েছে। কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয় চলতি বছরের আগস্ট মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ৩৬০ মিটার রাস্তা খুঁড়ে ড্রেনের জন্য আরসিসি পাইপগুলো বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ড্রেনের লাইনে ১৪ স্লাবের মধ্যে ছয়টির ঢাকনার কাজও শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো আটটি স্লাবের কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন রাস্তার দুপাশের শতাধিক পরিবারসহ আশপাশের ৪-৫ গ্রামের বাসিন্দা।
হাসনাত হাসান নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘খুব বিপদে আছি এই রাস্তা নিয়ে। আমার গাড়ি অন্য জায়গায় রেখে আসতে হয়। এর জন্য প্রতি মাসে আমার তিন হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে। শুনেছি এই রাস্তার কাজ আগস্ট মাসে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন যে অবস্থায় আছে তা কবে নাগাদ শেষ হবে বলে যাচ্ছে না।’
মিনহা হাসনাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের বাসার সামনের এই রাস্তাটি অনেক দিন ধরে খুঁড়ে রেখেছে। এখান দিয়ে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়, ভয়ও লাগে। এই রাস্তা দিয়ে কোনো রিকশাও চলে না।’
ব্যবসায়ী আনিস মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে রাস্তায় কাদা জমে থাকে। তাই ক্রেতারা আসতে চান না। বিক্রিও কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে গেছে। রাস্তার কাজ শেষ করতে যে কত সময় লাগবে, তা জানি না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এ ব্যাপারে ঠিকাদার আল রাফি বলেন, ‘আমাদের এই কাজটি খুবই জটিল। তাই সময় লাগছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।’
মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন খান বলেন, ‘রাস্তায় স্লাবের ঢাকনার কাজ বাকি আছে। আমি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা কাজ করছে।
কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে এই একই প্রশ্ন করা হলে তিনিও কোনো উত্তর দিতে না পেরে জানান, ‘আপনি জানেন যে রাস্তায় কাজ করতে বালুর প্রয়োজন। কিন্তু এতদিন বালু পাওয়া যায়নি। তাই বালু ফেলা যায়নি। তবে ঠিকাদার দুদিন ধরে তরা থেকে বালু এনে রাস্তায় ফেলছেন। ড্রেনের কাজ শেষ হলে তারা এই রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করবেন।’
আরও পড়ুন: