শনিবার

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
১৩ আশ্বিন, ১৪৩১
২৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

সিলেটের সাত শহীদের 'ঘাতক' এস আই জাবেদ আলীর যতো কুকীর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৩:১১

আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৪:৩১

শেয়ার

সিলেটের সাত শহীদের 'ঘাতক' এস আই জাবেদ আলীর যতো কুকীর্তি
এস আই জাবেদ আলী। ছবি: সংগৃহীত

গত চার আগস্ট সারা বাংলাদেশের মতো সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্যে আসা সাত জন সাধারণ ছাত্র-জনতাকে নির্মমভাবে গুলি করে মারার মূল কারিগর এস আই জাভেদ আলী।

ওই দিন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালনের সময় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে তাদের বাঁধা প্রদান করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ একের পর এক ফাঁকা ফায়ার এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

তারপর আওয়ামীলীগের স্থানীয় একজন নেতা রেঞ্জ ডিআইজির কাছে কল দিয়ে উক্ত বিষয়টি অবগত করে। সঙ্গে সঙ্গে সিলেটের রেঞ্জ ডিআইজি ওসিকে কল দিয়ে পরিষ্কার ভাষায় বলে দেন যে পরবর্তীতে কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচী পালন করতে আসলে গুলি করে কয়েকটা লাশ ফেলে যেন তাঁকে জানায়।

প্রত্যুত্তরে গোলাপগঞ্জ থানার ওসি ডিআইজিকে জানান, উশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য একের পর এক ফাঁকা গুলি করতে করতে থানায় রক্ষিত গুলি প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তখন অপর পাশ থেকে ডিআইজি বলেন, সে তার অফিসের একান্ত কাছের অফিসার এস আই জাবেদ আলীকে দিয়ে পুলিশ লাইন্স অস্ত্রাগার থেকে গুলি পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। এর কিছুক্ষণ পর এস আই জাবেদ আলী মোটরসাইকেল যোগে পুলিশ লাইন্স অস্ত্রাগার থেক গুলি নিয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় যায়।

রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের গত ০৪ আগস্টের অফিস আদেশ ও সিসি ক্যামেরা চেক করলে যার সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

পরবর্তীতে বিকাল তিনটার দিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদর হতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মিছিল থানা অতিক্রম করার সময় ডিআইজির নির্দেশে ওসি এবং এস আই জাবেদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থানার একটি টিম অপারেশন পরিচালনা করে সাত জন নিরাপরাধ মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।

এই অপারেশনের পুরো মাস্টার মাইন্ড ছিল রেঞ্জ ডিআইজির প্রতিনিধি এস আই জাবেদ আলী। ডিআইজি শাহ মিজান সিলেট রেঞ্জে আসার পর এস আই জাবেদ আলীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এস আই জাবেদ আলী আওয়ামীপন্থি অফিসার হওয়ায় তাকে ডিআইজি অফিসের বদলী শাখার আরও-১ এর দায়িত্ব দেয়া হয়। যার ফলে এস আই জাবেদ আলীর মাধ্যমে তিনি নিম্নপদস্থ পুলিশ সদস্যদের রদবদলের মাধ্যমে পোস্টিং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতি করে অবৈধভাবে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন।

ডিআইজির ছায়ায় থেকে এসআই জাবেদ আলীও গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। সেই অবৈধ অর্থ দিয়ে সে সিলেট শহরের বাগবাড়ি এলাকায় পাঁচতলা ফাউন্ডেশন বিল্ডিং করেছে। সেখানেই সে আর্থিক লেনদেনসহ সকল প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের চুক্তি করতো।

কিন্তু, পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর থেকে জাবেদ আলী পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় জনতা সাত শহীদের ঘাতক এস আই জাবেদ আলীকে গ্রেফতার করে বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি দেখতে চায়।