শনিবার

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
১৩ আশ্বিন, ১৪৩১
২৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হবিগঞ্জে বেপরোয়া বালু উত্তোলনকারী চক্র

প্রতিনিধি,হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:০২

আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:০৫

শেয়ার

হবিগঞ্জে বেপরোয়া বালু উত্তোলনকারী চক্র
বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বালু ব্যবসায়ী মাফিয়া চক্র। ছবি: বাংলা এডিশন

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বালু ব্যবসায়ী মাফিয়া চক্র। ডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ডের কমিশন বাণিজ্যের কারণে উপজেলার অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

ফলে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ লঙ্ঘন ও ভূমির শ্রেণী পরিবর্তনের অনুমোদন না নিয়ে ইজারাবিহীন চলছে বালু খেকোদের রমরমা ব্যবসা। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। কোথাও ভেঙ্গে যাচ্ছে নদীর পাড়। কোথাও তলিয়ে যাচ্ছে  হতদরিদ্রদের বসত বাড়িঘর। প্রতিবাদ করলে করা হয় হামলা, হুমকি ও হয়রানি এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। প্রায় ৫০ একর কৃষিজমি থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে অবৈধ বালু। এতে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুমিয়া ও মুরাদ মিয়া এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কারো মাথা ব্যাথা নেই।

মাধবপুরের বুল্লা ইউনিয়নের ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন সংযুক্ত করে গাগড়াবাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকা পাড়ি দিয়ে হাইওয়ে রোডের পাশে ফেলা হচ্ছে ইজারাবিহীন লক্ষ লক্ষ ঘনফুট বালু।

এই সিন্ডিকেটে স্থানীয় বুল্লা ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সাবেক মেম্বার মিলন মিয়া, আহাদ মিয়া ও সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম মামুন, সাবেক মেম্বার সাজিদ জড়িত থাকায় তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পান না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এদিকে, উপজেলা চৌমুহনী ইউপি মহব্বতপুর মৌজার মহব্বতপুর গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উত্তোলিত ৩টি প্যাকেজে ভাগ করা ৩০ লক্ষ ঘনফুট বালির মধ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ ঘনফুট বালু লুট হয়ে গেছে। শুধু ৩নং প্যাকেজের ইজারাদার ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরীর ইজারা যা কার্যকর রয়েছে। তিনি তার অংশের ইজারার লাইসেন্স দিয়ে বাকি ২ প্যাকেজের বালু আত্মসাৎ করছেন এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে বালু পাচার হচ্ছে এতে করে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব শুধু তাই নয় ৩টি প্যাকেজের মধ্যে ১নং প্যাকেজের বৈধ ইজারাদার মেসার্স শান্ত এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর শহিদুল ইসলাম শান্ত সরকারি ইজারা মূল্য পরিশোধ করলেও আইনি জটিলতায় স্থগিতাদেশ থাকায় বালু পাচারকারী চক্র প্রশাসনকে ম্যানেজ  করে দিনরাতে ওই বালু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

সোনাই নদীর সরকারী মালিকানার ২০ লক্ষ ঘনফুট  বালু প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে হরিলুটের ঘটনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি উপজেলা প্রশাসন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট ও কৃষি জমি। বিগত ২৫ মে ২০২৩ ইং শান্ত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম শান্ত হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বালু ইজারার সরকারী ৮২ লক্ষ টাকা মূল্য পরিশোধ করা শান্ত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম শান্ত জানান, ‘১০ লক্ষ ঘনফুটের বালুর মূল্য আমি সরকারকে পরিশোধ করেছি। এখন এসব লুট হয়ে যাচ্ছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শান্তর করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এসবের মূলহোতা শাহজাহানপুর ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী। চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী জানান, আমরা সবাইকে দিয়েই এখানে ব্যবসা করি। আমাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। পারলে উপরে কথা বলে আসেন। এলাকাবাসীর দাবি, রাস্তাঘাট ও কৃষি জমির সুরক্ষার স্বার্থে ইজারাবিহীন বালু উত্তোলন

শুধু বন্ধই নয়, অপরাধীদের বিরুদ্ধে যাতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসি।