রবিবার

২৪ নভেম্বর, ২০২৪
৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
২২ জামাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

কুমিল্লায় গ্রেফতার হওয়া সেই রুবেল রাজশাহীর আলী রায়হানের হত্যাকারী

প্রতিনিধি,রাজশাহী

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:১৪

আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:১৫

শেয়ার

কুমিল্লায় গ্রেফতার হওয়া সেই রুবেল রাজশাহীর আলী রায়হানের হত্যাকারী
শহীদ আলী রায়হান। ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ৪৩ বছর বয়সী জহিরুল হক রুবেলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতার হওয়া  জহিরুল হক রুবেল রাজশাহীর আলোচিত শহীদ আলী রায়হানের হত্যাকারী। ১৯ আগস্ট বোয়ালিয়া থানায় আলী রায়হানের ভাই রানা ইসলামের করা মামলার ৩নং আসামী এই রুবেল।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পূর্ব মুহুর্তে আওয়ামী লীগের নারকীয় তাণ্ডব চলাকালে সেই অস্ত্রবাজিতে জহিরুল হক রুবেল ছিলো একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তাকে জনতার মিছিলের ওপর হেলমেট পরিহিত অবস্থায়  গুলি করতে দেখা যায় এবং তার করা গুলিই লেগেছিলো আলী রায়হানের মাথায়।

আলী রায়হান, রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান  বিভাগের  শিক্ষার্থী। তার বাবার স্বপ্ন ছিলো তার ছেলে বড় কোনো চাকরী করবে। রায়হানের ভেতরে লুকায়িত থাকা দেশপ্রেম আর তারুণ্যের তেজ তাকে নামিয়ে আনে ৫ আগস্টের উত্তপ্ত মাঠে।

তার বাবা বাংলা এডিশনকে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার ছেলে শহীদ হওয়ার কথা বলতো, বারবার বলতো বাবা দরকার হলে আমি শহীদ হবো।’ পিতার কাছে জানানো সেই বাসনাই যেনো পূর্ণ করতে নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন সেদিন।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহী শহরে নেমে আসে অজস্র মানুষের ঢল। রাজশাহীর আলুপট্টির সচ্ছ টাওয়ারের সামনে জড় হয় আন্দোলনরত জনতা সাগরপাড়ার দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য।

ইতিমধ্যেই খবরটি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কানে পৌঁছালে তারা আন্দোলনরত জনতাকে দমন করার জন্য এগিয়ে আসে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র, লাঠি, পাইপ এবং আগ্নেয়াস্ত্রসহ আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদের মিছিলে।

আওয়ামী দোসরদের আক্রমণে  মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ছত্রভঙ্গ জনতাকে বেধরক মারধর এবং গুলিবর্ষণ করে হামলাকারীরা। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে আহত হওয়া মারুফ মোর্তজা, মারুফ আল হাসান, মেহেদি হাসান এবং ইব্রাহিম আলীকে উদ্ধার করতে যায় আলী রায়হান। এসময় রায়হানকে উদ্দেশ্য করে গুলি করে গ্রেফতার হওয়া এই জহিরুল হক রুবেল। মাথায় গুলিবিদ্ধ রায়হানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

রায়হানের হত্যাকারী এই জহিরুল হক রুবেল রাজশাহী সিটির ৭ নং ওয়ার্ডের চণ্ডিপুর এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। একইসঙ্গে তিনি রাজশাহী মহানগর যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন।