রবিবার

২৪ নভেম্বর, ২০২৪
১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
২২ জামাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হবিগঞ্জ রেকর্ড রুমের ঘুষকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:৫৮

আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:০০

শেয়ার

হবিগঞ্জ রেকর্ড রুমের ঘুষকাণ্ড

নোটের আকৃতি নির্ধারণ করে দেয় কাজের গতি। স্থানীয়দের মাঝে এমনটাই কথিত রয়েছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ড রুম শাখার ব্যাপারে। সেক্ষেত্রে সামনে এসেছে রেকর্ড রুম শাখার এক অফিস সহকারীর নাম।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মজিদ মিয়া সন্তুষ্ট হলে তবেই রেকর্ড রুম থেকে নকল উত্তোলন সম্ভব। জেলা রেকর্ড শাখার কাজ চলে তার ইশারায়। মোহাম্মদ মজিদ মিয়া এ শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত।

চাহিদা মতো নোট হাতে না গেলে অফিস সহকারী মজিদ মিয়া শুধু কাজই আটকে দেন না, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নথির নকল উত্তোলনের জন্য সেবাপ্রত্যাশীদের করা আবেদনপত্র হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে রেকর্ড রুমে। সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদ আব্দুল মুহিন নামে এক ভুক্তভোগী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৫ সেপ্টেম্বর রেকর্ড রুম শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে একটি বিবিধ মামলার আরজি, জবাব ও আদেশের নকলের জন্য আবেদন করেন ওই ব্যক্তি। পরবর্তী সময়ে আবেদনের অগ্রগতি জানতে জেলা রেকর্ড রুম শাখায় গেলে অফিস সহকারী মজিদ মিয়া আব্দুল মুহিনের কাছে একাধিকবার ঘুষ দাবি করেন। ভুক্তভোগী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরে আদায় করে নেবেন বলেও হুমকি দেন মজিদ।

সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর রেকর্ড রুমে গেলে নকলের জন্য মুহিনের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেন মজিদ মিয়া। তখন ভুক্তভোগী তাকে ৩০০ টাকা দিতে চাইলে রেগে গিয়ে নকলের জন্য এক মাস পর অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে বাধ্য হয়ে ৪৫০ টাকা ঘুষ দিয়ে নকল তোলেন আব্দুল মুহিন। অথচ একাজের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি মাত্র ৫৮ টাকা।

আব্দুল মুহিন জানান, তাঁর ভাই আব্দুল ওয়াহিদ ১৫ আগস্ট ওই নথির নকল উত্তোলনের জন্য আবেদন করেন। অফিস সহকারী মজিদ মিয়াকে ঘুষ না দেয়ায় সেটির কোনো খবরই পাওয়া যায়নি। পরে তিনি বাধ্য হয়ে নতুনভাবে আবেদন করেন এবং মজিদকে ঘুষ দিয়ে নকল উত্তোলন করেছেন।

এ বিষয়ে রেকর্ড রুম শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মজিদ মিয়া বলেন, স্বেচ্ছায় কেউ কিছু দিলে আমার আপত্তি নেই। নিয়ম হচ্ছে ফলিও ও কোর্ট ফি দেওয়ার। সেটার সঙ্গে কেউ যদি দুই-একশ টাকা বেশি দেয় তাহলে আপত্তির কিছু নেই। কে কী অভিযোগ দিয়েছে সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

জেলা রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিৎ চন্দ্র দাস জানান, অভিযোগ যেহেতু জেলা প্রশাসক বরাবর করা হয়েছে সেহেতু তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন এ ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে। তার দিক থেকে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।