আর কয়েক দিন পরেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসব ঘিরে জেলাজুড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে, তাদের মাঝে উৎসবের আমেজ লেগেছে। শারদীয়া উৎসবকে ঘিরে তোড়জোড়ের শেষ নেই প্রতিমা ও আলোকসজ্জা শিল্পী, ডেকোরেটরসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।
প্রতিমা তৈরির পর রঙের আঁচড় দেয়ার কাজ চলছে। প্রায় মাস খানেক সময় ধরে নিপুণ হাতে রং তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গার সর্বোচ্চ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। একইভাবে ব্যস্ত ডেকোরেটরসহ আলোকসজ্জা শিল্পীরা।
সবমিলিয়ে গাইবান্ধার মন্দির ও মণ্ডপগুলোতে এখন চলছে রং তুলির আঁচড়ে শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি। পূজা উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
গাইবান্ধা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানায়, এ বছর জেলার সাত উপজেলা ও চারটি পৌরসভায় ৫৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৯৫টি, সুন্দরগঞ্জে ১১৫টি, সাদুল্লাপুরে ৯৫টি, পলাশবাড়িতে ৫৮টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২৭টি, সাঘাটায় ৫৮টি এবং ফুলছড়িতে ১৩টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।
তবে এ বছর গাইবান্ধায় মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। গত বছর জেলায় ৬৩০টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এ বছর কমেছে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা। এবার জেলায় ৬৯টি কমে ৫৬১টি মন্দির-মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুজন প্রসাদ জানান, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আমরা সকল সম্প্রদায়ের মানুষ এক সঙ্গে মিলে জেলায় শারদীয় উৎসবের আনন্দ উপভোগ করবো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ তদারকি অব্যাহত রেখেছেন।’
গাইবান্ধা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র সরকার জানান, ‘আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপনের জন্য হিন্দু-মুসলিম সবাই সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তারপরও মণ্ডপ এলাকায় কোনো সমস্যা আছে কিনা, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, গতবারের মতো এবারো সবাইকে নিয়ে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সার্বজনীন এই উৎসব সফলভাবে শেষ হবে।’
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী ও ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী পালিত হবে। মহানবমী পালিত হবে ১২ অক্টোবর। ১৩ অক্টোবর পালিত হবে বিজয়া দশমী। ওই দিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
আরও পড়ুন: