কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পটুয়াখালীবাসীর জন্য। পরিবেশ দূষণ এবং জীববৈচিত্র, বনাঞ্চল ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি নিয়ে শঙ্কিত উপকূলের বাসিন্দারা।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, কয়লা থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, বিষাক্ত সালফার, সীসা ও ভারী ধাতু নির্গমনের ফলে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৈরি হয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিবেশের ক্ষতি না করেই নির্মাণ করা হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পরিবেশবিদরা বলছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যান্য যেকোনো ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে। এছাড়া বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন, ক্যাডমিয়াম, সীসা, ছাই, গ্যাস ও ভারি ধাতুর পরিবেশে নির্গমনের ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দূষণের কবলে পড়েছে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন বলেন, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবার পর থেকে আমাদের এলাকায় নারিকেল, সুপারি, তাল এগুলো হয়না।
যদিও কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই বলে আসছে, পরিবেশের ক্ষতি না করে করা হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব বলেন, পরিবেশ অধিদফতর নিয়মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র মনিটরিং করে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৯৯ শতাংশ ছাই সরানো হয়ে নিয়মিত। এছাড়া ৯৩-৯৪ শতাংশ সালফার সরানো হয়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়লা পোড়ানোর ফলে সালফার ডাই-অক্সাইড বা কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, সেটি খুবই গুরুত্ব সহকারে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের এলাকার পানি-মাটিসহ পুরো পরিবেশেরই ক্ষতি সাধন হবে।
বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে ২০১৭ সালে পটুয়াখালীতে নির্মাণ করা হয় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর দুই বছর পর ২০১৯ সালে এর পাশেই নির্মাণ করা হয় আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডে (আরএনপিএল) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: