২৮ জুলাই সময় বেলা ৩ টা। ছাত্র আন্দোলনে যখন সারাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে তাই সারা দেশেই। উত্তরার আযমপুর মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি ও ঔষধ বিতরণ করছিলো স্থানীয়রা। সেসময় পুলিশের ছোড়া বুলেট গলার এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যায় একজন যুবকের। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়া সাব্বিরকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ছাত্ররা। আবরার ছিলেন ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন তিনি।
নিহত সাব্বিরের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। সাব্বিরের বাড়িতে কথা হয় সাব্বিরের মা বাবা ও প্রতিবেশীদের সাথে।
সাব্বিরের মা বলেন সাব্বির ছোট বেলা থেকেই দুরন্ত ছিল। মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। অস্বচ্ছল পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে গত ৬/৭ বছর ঢাকায় নির্মান শ্রমিকের কাজ করে। সেই আয় দিয়েই পরিবারের প্রয়োজন মেটাতো ছেলেটি।
গত ১৮ জুলাই ছাত্রআন্দোলনের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি ও ঔষধ সরবরাহের সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় সাব্বিরের।কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাব্বিরের মা।
তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর একদিন আগেও কথা হয়েছিলো সাব্বিরের সাথে। পরবর্তীতে সাব্বিরের চাচাতো ভাবি সাব্বিরের মৃত্যু খবর দেন। আমোদ আলী ও রাশিদা দম্পতির তিন সন্তানের সবার বড় ছিল সাব্বির। সকলের বড় হওয়ায় পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছিল ২৩ বছর বয়সী সাব্বির। সাব্বিরের মা আরও বলেন, ছেলের মৃত্যু হওয়ার পর ছাত্রদের পক্ষ থেকে একটি গরু এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের পক্ষ থেকে দুই-লক্ষ টাকা অর্থ সহায়তা পেলে পেয়েছেন তারা।
তবে সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পায়নি পরিবারটি। সরকার সাব্বিরের নামে একটি মসজিদ নির্মান করে দিলেই খুশি সাব্বিরের মা।
সাব্বিরের প্রতিবেশি বলেন,সাব্বির ছেলে হিসেবে খুবই ভালো ছিল। ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ছেলেটির। সাব্বির হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি তাদের।
সাব্বিরের পিতা বলেন, একজন শহীদের বাবা হিসেবে নিজেকে অনেক গর্বিত মনেহয়।
তিনি জানান, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবরে তিনি একদিকে খুশি হয়েছিলেন আবার সন্তান হারানোর কষ্টও অনুভব করছিলেন।
আরও পড়ুন: