যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন। প্রায় ৩ বছর পর সম্প্রতি এই চার্জশিট জমা দেয়া হয়।
এছাড়া কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে শিক্ষাবোর্ডের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানানো হয় চার্জশিটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম।
অভিযুক্তরা হলেন, শিক্ষা বোর্ডের হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম, প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শেখ শরিফুল ইসলাম, হাইকোর্ট মোড়ের শাহী লাল স্টোরের মালিক আশরাফুল আলম, পোস্ট অফিস পাড়ার নুর এন্টারপ্রাইজের মালিক গাজী নূর ইসলাম, শহরের জামে মসজিদ লেন এলাকার প্রত্যাশা প্রিন্টিং প্রেসের মালিক ইকবাল হোসেন ও স্ত্রী রুপালী খাতুন, উপশহর ই-ব্লক এলাকার মো. শহিদুল ইসলাম, একই এলাকার সোনেক্স ইন্টারন্যাশনালের মালিক রকিব মোস্তফা, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সহকারী মূল্যায়ন অফিসার আবুল কালাম আজাদ, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জুলফিকার আলী, নিম্নমান সহকারী মিজানুর রহমান ও সাধারণ কর্মচারী কবির হোসেন। ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর আত্মসাতের প্রথম ঘটনাটি ধরা পড়েছিলো।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর ওই বছরের ১৮ অক্টোবর মামলা করে। তদন্তে মোট ১১ জন আসামির বিরুদ্ধে যশোর শিক্ষা বোর্ডের ৩৮টি জালিয়াতির ঘটনায় মোট ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক যশোরের উপ-পরিচালক আল আমিন গত ৮ অক্টোবর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেক জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানীকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যর অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে মতামত প্রদান করেন যে, বিতর্কিত চেকগুলোর টাকার অংক এবং কথায় লেখার অংশে নিরাপত্তা দাগগুলো ঘষে ওঠানো হয়েছে, তা আল্ট্রাভায়োলেট মেশিনে স্পষ্টভাবে পরিদৃষ্ট হয়েছে। ভ্যাট ও আয় করের চেকগুলো এবং যে চেকগুলোতে প্রাপকের নাম পাল্টে অন্য নাম বসানো হয়েছে তার সবগুলোতে প্রাপকের নাম লেখার অংশে নিরাপত্তা দাগগুলো ঘষে ওঠানো হয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। সাধারণ চোখে এটি তেমন নজরে পড়েনা। খুব খেয়াল করলে টেম্পারিং করার চিহ্ন দেখা যায়।
দুদক যশোরের উপ-পরিচালক আল আমিন জানান, 'যশোর শিক্ষা বোর্ডের ইস্যুকৃত ৩৮টি চেক রিসিভ করার পর টেম্পারিং/ঘষামাজার মাধ্যমে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩ টাকা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে অভিযুক্তরা।'
আরও পড়ুন: