কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতাদের অতি মুনাফা করার চেষ্টা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছে বরিশালের ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা। ৫০ টাকার পণ্যটি ৭০/৮০ টাকা, ২০০ টাকার পণ্যটি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছে। কেউই অল্প লাভ করতে রাজি নয়, সবাই রাতারাতি মুনাফা অর্জনের চেষ্টায় ব্যস্ত।
বারবার নোটিশ করার পরও খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ অংশ কোনো বিক্রয় তালিকা ঝুলিয়ে রাখেনি, নেই কোনো পণ্যের ক্রয় রশিদ। এজন্য জরিমানা করতে গেলে হাতে পায়ে ধরে এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যে শেষ পর্যন্ত জরিমানা মাফ করে তালিকা ও রশিদ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছেড়ে দিতে হচ্ছে বিক্রেতাকে।
সরেজমিনে ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এই চিত্র দেখা গেছে বরিশালের সাগরদি বাজার এলাকায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরিশালের ভোক্তা অধিকারের উপপরিচালক অপূর্ব অধিকারীসহ চার সদস্যের টিম ও পুলিশ সদস্যরা সাগরদি বাজারে ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় তারা প্রথমে ডিমের বাজার পরিদর্শন করেন ও ৫৬/৫৪ টাকা দরে ডিম বিক্রি করতে দেখেন। যদিও এই বাজারসহ নগরীর চৌমাথা, বাংলা বাজার, নতুন বাজারের বেশকিছু ডিম ব্যবসায়ী বাছাইকৃত বড় সাইজের ডিম ৬০ টাকা হালিতে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাদের দেখেই সেই ডিম সরিয়ে নিয়েছে তারা বা ৫৬ টাকা দরে বিক্রি বলে জানাচ্ছে।
এ সময় ডিম বিক্রেতারা যে ক্রয় রশিদ দেখান তা পাইকারী মূল্য ডিম প্রতি ১২ টাকা ১১ পয়সা। পরিবহন খরচ যুক্ত করে তারা ৫৬/৫৪ দরে বিক্রি করছেন বলে জানান ব্যবসায়ী। এসময় একজন ডিম ব্যবসায়ী বলেন, ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আপনাদের পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি যেতে হবে। বরিশালের বেশিরভাগ ডিম সাপ্লাই হয় ওখান থেকে। ওখানকার খামারীরাই দাম বেশি নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
এরপর পরপরই ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা প্রবেশ করেন সাগরদি বাজারের সবজী ও মাছ বাজারে। এখানে কাচা মরিচ ৩২০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, পেপে ৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি চলছে। ক্রয় রশিদ দেখাতে বললে এখানের একটি দোকানেও কোনো বিক্রয় তালিকা বা পণ্য ক্রয় রশিদ পাওয়া গেলনা।
ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা অপূর্ব অধিকারী জানালেন, সকালে আমরা পাইকারী কাঁচাবাজার ঘুরে সেখানের দর দেখে এসেছি। পাইকারী কাঁচাবাজারে কাঁচা মরিচ ১৮০/২০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। পেপে ২০/২৫ ও মিষ্টি কুমড়া পিস দরে বিক্রি হয়েছে ৩০-৫০ টাকায়। খুচরা ব্যাবসায়ীদের অতি মুনাফা করার প্রবণতা। এরা এই ক্রাইসিস মুহূর্তে এটা না করলেই আর সমস্যা হয়না। মানবিক কারণে এদের শাস্তিও দিতে পারিনা বলে জানান অপূর্ব অধিকারী।
এসময় ক্রেতাদের কয়েকজন অমল দাস, মাহবুব খান, মুরাদুল ইসলাম হিমেল বলেন, মানবিকতা দেখানোর কাজতো ভোক্তা অধিকারের নয়। অপরাধীকে শাস্তি দিতে তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন বলেই আমাদের দাবী কেন্দ্রীয় পাইকারী বাজার নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠনের বিকল্প নেই। একইসাথে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া পণ্যটি এক সপ্তাহের জন্য বয়কট করার আহ্বান জানান এই ক্রেতারাও।
আরও পড়ুন: