গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মসজিদ ভাঙচুর ও মুসল্লিদের মারধরের চেষ্টার অভিযোগে জাইদুল ইসলাম নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত জাইদুল ইসলাম উপজেলার পশ্চিম মনোহরপুর গ্রামের মকবুল শেখের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মনোহরপুর গ্রামে দুই সপ্তাহ আগে এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গান বাজনা হচ্ছিল। পরে সমাজের লোকজন উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করে। পরবর্তীতে গান বাজানো বন্ধ করা হয়। এই ঘটনার জের ধরে জাইদুল ইসলাম শনিবার বিকেলে মসজিদে এসে মসজিদের একটি জানালার গ্লাস ভেঙে দেয় এবং সেখানে উপস্থিত কয়েকজন মুসল্লির ওপর হামলা করে তাদেরকে মারধর করেন।
এ সময় মুসল্লিরা মসজিদের মাইকে ভাংচুরের বিষয়টি প্রচার করে। মাইকে ঘোষণা শুনে গ্রামের লোকজন এসে মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়ে জাইদুলকে আটক করে। পরে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় জনতা জাইদুলকে পলাশবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এঘটনায় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে জাইদুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে পলাশবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মসজিদ ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত এবং অস্ত্র আইনে এ মামলা দায়ের হয়।
এদিকে শনিবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে জাইদুল ইসলামের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে জাইদুলের একটি টিনসেড ঘর পুড়ে যায়।
এলাকাবাসি জানায়, জাইদুল ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি ঘটনার দিন নেশাগ্রস্থ অবস্থায় একটি ছুরি নিয়ে মসজিদ চত্বরে আসে। তিনি ছুরি দিয়ে মসজিদের জানালার গ্রাস ভেঙে দেয়। পরে মসজিদের সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করবে বলে তার বাড়িতে যায়। এসময় সিরাজুল নিজেকে রক্ষায় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
মসজিদের মোয়াজ্জিন মোনারুল ইসলাম বলেন, জাইদুল ইসলাম শনিবার আসরের নামাজের পর মসজিদে হামলা চালিয়ে একটি জানালার গ্লাস ভাঙচুর করতে থাকে। তার কাছে ধারালো ছুরি থাকায় কেউ তাকে থামাতে পারেনি। পরে সবাই একজোট হয়ে তাকে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছে।
এসব বিষয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মামলার বাদি সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী বলেন, ওই যুবকের বিরুদ্ধে মসজিদ ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: