রবিবার

২৪ নভেম্বর, ২০২৪
৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
২২ জামাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

প্লাস্টিকের বিনিময়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার পেলেন ৩ শতাধিক পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর, ২০২৪ ১৬:২৫

আপডেট: ২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১৬:২২

শেয়ার

প্লাস্টিকের বিনিময়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার পেলেন ৩ শতাধিক পরিবার
ছবি: বাংলা এডিশন

ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আফসানা বেগম৷ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন তিনি৷ প্লাস্টিক দিলে মিলবে চাল, ডাল, চিনি ও মুরগীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য৷ এমন খবরে তিন কেজি প্লাস্টিক নিয়ে আসেন তিনি৷ প্লাস্টিক দিয়ে পেয়েছেন ব্যাগ ভর্তি বাজার৷ এমন বাজার করতে পেরে খুশি আফসানা বেগম৷ 

আফসানার মতন আরো তিন শতাধিক মানুষ ব্যাগ-বস্তায় করে প্লাস্টিক নিয়ে এসেছেন। কেউ ২ কেজি, কেউ ১০ কেজি আবার কেউ নিয়ে এসেছেন ২০ কেজি প্লাস্টিক। প্লাস্টিক জমা দিয়ে বাজার কিনছেন নিজের পছন্দমত। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে প্লাস্টিক দিয়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে পরিবার নিয়ে একবেলা পেট ভরে খাওয়ার কথা জানান উপকার ভোগীরা৷ 

ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিউটি সেন্টারে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে করা হয় এমন আয়োজন। প্লাস্টিক দিলেই মিলবে ১৬ প্রকারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে ভিন্নধর্মী বাজারের আয়োজন করে ফাউন্ডেশনটি৷ 

ব্যাগভর্তি বাজার পেয়ে আফসানা বেগম বলেন, অভাবের সংসারে নুন আন্তে পান্তা শেষ হয়ে যায়৷ আজকে প্লাস্টিক নিয়ে এসে চিনি, মুরগি পেলাম৷ এটা আমাদের মতন নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য উপকারে। দুবেলা পেট ভরে তৃপ্তি করে খাওয়া যাবে। যারা আয়োজন করেছে আল্লাহ তাদের ভালো করুক৷ 

প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য নিতে আসা জুলেখা বেগম বলেন, বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি সেই তুলনায় এই অল্প পরিমাণ প্লাস্টিক দিয়ে আমাদের যেই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুব খুশি। কিছুদিন পরপর যদি এমন আয়োজন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয় ।

আলামিন নামে আরেকজন রিকশাচালক বলেন, আমি ১৫ কেজি প্লাস্টিক নিয়ে এসেছিলাম সেটা দিয়ে আজকে আমি ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়েছি মুরগি ,মাছ সহ বিভিন্ন ধরনের বাজার নিয়েছি। অনেকদিন পরে আমরা এরকম একটা বাজার করতে পেরেছি তাতে খুব খুশি লাগতেছে। আমার পরিবার অনেক খুশি হবে। আজ খাওয়া দাওয়া ভালো হবে। 

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবক শিহাব মিয়া বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে আমরা ১৬ প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি৷ দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে স্বস্তির পাশাপাশি প্লাস্টিক ব্যবহারে অনুৎসাহী করা হচ্ছে৷ 

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সরদার শাহীন বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহারে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ৷ এতে ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে চারপাশ। ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগকে প্রশংসার দাবি রাখে৷ করে সচেতনতার সাথে স্বস্তি পাবেন উপকার ভোগীরা মানুষেরা। এমন আয়োজন অব্যহত থাকুক৷