বৃহস্পতিবার

৭ নভেম্বর, ২০২৪
২৩ কার্তিক, ১৪৩১
০৫ জামাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

প্রতিনিধি,কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১৪:৪০

শেয়ার

কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ
কোলাজ: বাংলা এডিশন

কুষ্টিয়া জেলায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে। অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে। এখানে ক্রমেই বাড়ছে খুন, লাশ উদ্ধার, মারামারি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। অনেক জায়গায় চলছে চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলযজ্ঞ। কিছুতেই কমছে না মাদকের আগ্রাসনসহ নানা অপরাধ। অশান্ত হয়ে রক্তাক্ত জনপদে রুপ নিচ্ছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত নানা অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

যথা সময়ে এসব অপরাধ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সামাল দিতে না পারলে আইন-শৃঙ্খলার আরও অবনতি হবে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। প্রশাসনের যথাযোগ্য ভূমিকার অভাবে সর্বত্রই অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে তাদের অভিমত। এতে সাধারণ মানুষ জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।

জানা গেছে, নিখোঁজের চার দিন পর ৯ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী গ্রামের একটি পুকুর থেকে আসাদুল নামের এক ব্যবসায়ীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আসাদুল মিরপুর উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের মহাম্মদপুর গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে। তিনি ছিট কাপড়ের ব্যবসা করতেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। 

১৯ আগস্ট রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর পদ্মা নদীর রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত খেয়াঘাট এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় সাগর হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা নৌ পুলিশ। সাগর হোসেন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পদ্মার চরের লোকনাথপুর গ্রামের মৃত সৌকত মণ্ডলের ছেলে।

২৪ আগস্ট সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামে সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঐ ঘটনায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

২৪ আগস্ট দুপুরে কুষ্টিয়ার আল্লার দর্গাবাজার এলাকায় রজব আলী নামের ভ্যানচালকের ঘুষিতে বারু সর্দার নামের অপর ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়। ঐ ঘটনায় অভিযুক্ত ভ্যানচালক রজবকে আটক করে পুলিশ। বারু সর্দার উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের চামনাই এলাকার মৃত বিদু সর্দারের ছেলে। রজব আলী একই উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাহেরমাদি এলাকার বদরউদ্দিনের ছেলে।

৩০ আগস্ট রাতে নিজ এলাকায় পিকনিক করছিল দুটি গ্রুপ। এ সময় তাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে হামলার ঘটনা ঘটলে কলেজছাত্র রাব্বি হোসেন আহত হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাব্বি হোসেন উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাইকুণ্ডি উত্তরপাড়া গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে।

৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দখল করে চাঁদাবাজি, চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়।

১৫ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে গড়াই নদের রেল সেতুর জয়নাবাদ অংশ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।

২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুরে উপজেলার ঈগল চত্বরে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব রউফ চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

২৫ সেপ্টেম্বর সকালে খোকসা উপজেলায় জানিপুর ইউনিয়নের শেখপাড়া বিহারীয়া গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমানের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম এবং হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। আহত মজিবর রহমান জানিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নে রশিদিয়া দরবার শরিফে হামলা ও ভাঙচুরের পর ওই দরবার শরিফে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

৩০ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টুকে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি।

১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কার্টপাড়া এলাকায় একটি চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে রুবেল হোসেন নামের এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করা হয়। নিহত রুবেল হোসেন কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। রুবেল কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।

৬ অক্টোবর কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন লাঞ্ছিত হয়। তারা অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় অন্য শিক্ষকরা দাড়িয়ে ছিলেন। এরপর নতুন অধ্যক্ষকে কলেজ থেকে বের করে দেন শিক্ষার্থীরা। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষকের ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ঘটনার পর কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মোসলেম উদ্দিন।

৮ অক্টোবর বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া গ্রামের পদ্মা নদীতে বালু তোলার সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের সোহরাব

আলী শেখের ছেলে হুমায়ন শেখ ও সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিমুল হোসেন নামের দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়।

১০ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাজপাড়া গ্রামের সরকার পাড়া মোড়ে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় বিএনপির অন্তত ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়।

১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীর চর এলাকার পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার পাবনা নৌ পুলিশ।

১৫ অক্টোবর ও ১৬ অক্টোবর কুষ্টিয়ায় গড়াই নদে আওয়ামী লীগ নেতার ইজারা নেয়া বালুর ঘাট ভাগাভাগি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় বালু ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ সমাবেশ ও অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা ঘটেছিলো। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই বালুঘাট থেকে সাময়িকভাবে বালু অপসারণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

২২ অক্টোবর দুপুরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের দশমাইলের কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকা ছিনতাই করার সময় ইকরাম হোসেন নামের এক যুবককে আটক করে স্থানীয় জনতা। পরে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটক ইকরাম হোসেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে। ঘটনার সময় ইকরামের আরও তিন সহযোগী পালিয়ে যায় বলে জানা যায়।

২৩ অক্টোবর কুষ্টিয়ায় কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাদ্দাম বাজার এলাকার নাসির উদ্দিন সড়কে বাসিন্দা খন্দকার মাহে আলম ছুরি দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।

২৬ অক্টোবর দিবাগত রাত দুইটার দিকে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের নতুন সুতাইল গ্রামে একটি বাড়িতে চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কেদারনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়।

২৮ অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে জলদস্যুদের হামলায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বেড় কালোয়া এলাকার পদ্মা নদীতে এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন দুই পুলিশ সদস্য নিখোঁজ হয়। দুই পুলিশ সদস্যকে জীবিত উদ্ধার করতে না পারলেও ২৯ অক্টোবর এবং ৩০ অক্টোবর পদ্মা নদী থেকে দুই পুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়।

২৮ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া কুষ্টিয়াগামী আল আমিন পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় মিরপুরের শিমুলতলা এলাকা থেকে মালিকবিহীন ২৫ মিলি লিটার বোতলের ৯ বোতল বিষ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির সদস্যরা। উদ্ধার করা বিষের আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৪৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা বলে জানানো হয় বিজিবির পক্ষ থেকে।

৩০ অক্টোবর বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাই আব্দুল হামিদ ও নজরুল ইসলাম মন্ডল দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও মারধর করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

কুষ্টিয়া জেলায় বেশ কিছুদিন ধরে চুরির প্রকোপ বেড়েছে। জেলার কোথাও না কোথাও চুরি অথবা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। খোদ ভেড়ামারা থানার গ্যারেজ থেকে ৩ পুলিশের তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে চোরের দল। ৩১ অক্টোবর রাত ২টা ৪০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।

১ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের ইনসাফনগর এলাকা থেকে দেশীয় একটি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন বিজিবির সদস্যরা।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় প্রতিদিন কোন কোন চুরি এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেই চলেছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড ও আইলচারা ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া এলাকার স্টিল ব্রীজে গত ৫ আগস্টের পর থেকে নূন্যতম ৪ থেকে ৫ বার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অন্যান্য উপজেলাতেও একাধিক স্থানে চুরি, ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৯টার পরে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম দৌলতপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সংলগ্ন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মানিকদিয়ার লতিফ মোড় এলাকায় তার নিজ বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার কাছে থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুটে নেয়। যার ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার শিতলাইপাড়া-ঘোড়ামারা মাঠের মধ্যে থেকে ঔষধ কোম্পানি এসআর হাফিজুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করে মোটরসাইকেল ও অর্ধ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। বর্তমানে সে গুরুতর আহত অবস্থায় দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে।

স্থানীয়রা জানান, আগে এলাকায় পুলিশি টহল থাকার কারণে এতো চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই ছিল না। গভীর রাতেও মানুষ রাস্তাঘাটে চলাচল করতো। এখন সন্ধ্যার আগেই রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তায় বের হলেও পড়তে হচ্ছে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের কবলে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও মানুষ ভয়ে যেতে পারছেন না।

এদিকে দিনে দিনে পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ এবং ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। জেলার একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, বিভিন্ন মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে এবং জনসন্মুখে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। পুলিশকে ফোন দিলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। চুরি এবং ছিনতাই রোধে পুলিশের তেমন কোন ভূমিকা চোখে পড়ছে না।

সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে ফোন কেটে দেন।