নিখোঁজের সাত দিন পর সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজ শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার ভোরে নিজ বাড়ির পুকুর থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ সময় শিশুটির গলায় রশি পেঁচানো ছিল। হত্যার পর মরদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
মুনতাহার বাবা দাবি করেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে শিশু মুনতাহা। পরে আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে হলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুনি শামিমা বেগম (মার্জিয়া) হচ্ছে মুনতাহার মামাত বোন। ইতিপূর্বে একসময় ২৫০ টাকার বিনিময়ে মুনতাহাকে প্রাইভেট পড়াতো এবং বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যেত, একদিন মার্জিয়া মুনতাহার কিছু কাপড় চুরি করতে গিয়ে ধরা মুনতাহার বাবার হাতে ধরা পড়ে এবং এজন্য মার্জিয়াকে অপমান করা হয়। তারপর থেকে মুনতাহাকে প্রাইভেট পড়াতে মার্জিয়াকে বারণ করা হয়।
তখন থেকেই মার্জিয়া চরম অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছক আঁকতে থাকে কিভাবে মুনতাহাকে অপহরণ করা যায়। অবশেষে মার্জিয়া তার পরিকল্পনা মতে মুনতাহাকে অপহরণ করে এবং শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলে।
এ বিষয়ে দেশের মিডিয়া, ফেসবুকসহ হারানো বিজ্ঞপ্তি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। গতকাল রাতে স্থানীয় কয়েকজন কৌশল অবলম্বন করে পরিকল্পনা মাফিক এসে মুনতাহার পরিবার এবং মার্জিয়ার পরিবারসহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে মার্জিয়ার কথাবার্তা ও আচরণ সন্দেহ হলে পরবর্তীতে কানাইঘাট থানা পুলিশ এসে মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মার্জিয়া এবং মার্জিয়ার মা মিলে আগেই মুনতাহাকে মেরে তাদের ঘরের পিছনে খালে পুতে দেয়।
পরে রাত ৩ টার দিকে মার্জিয়ার মা ওই খাল থেকে মুনতাহার লাশ পুকুরে ফেলতে গিয়ে পাশের বাড়ির একজন লোকের চোখে ধরা পড়ে। তিনি সাথে সাথে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন এবং শেষ পর্যন্ত মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: