সিরাজগঞ্জে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য ক্রয় করা হয়েছিল কোটি টাকা মূল্যের লিথোট্রিপসি মেশিন। যার মাধ্যমে কোনো ধরনের কাটাছেঁড়া ছাড়াই কিডনি থেকে পাথর অপসারণ করা যাবে। এতে উপকৃত হবেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা।
কিন্তু খাতা-কলমে ঠিক থাকলেও ক্রয় করার পর থেকেই বিকল হয়ে পড়ে আছে অত্যাধুনিক এই লিথোট্রিপসি মেশিনটি। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে সেবা না পেয়ে বেসরকারি হাসপাতালে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে রোগীদের। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র রোগীরা। এ ঘটনায় এর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে কোটি টাকায় মেশিনটি সরবরাহ করে নারায়ণগঞ্জের সোনাকান্দা বন্দরের নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। কিন্তু কেনার পর থেকে লিথোট্রিপসি মেশিনটি এই হাসপাতালে রোগীদের জন্য এক দিনও ব্যবহার হয়নি। প্রকৌশলীরা প্রথম দিন স্থাপন করার সময়ই মেশিনগুলো নষ্ট দেখতে পান।
রায়গঞ্জ উপজেলা থেকে আসা কৃষক আব্দুল মোমিন জানান, ‘আমার কিডনিতে পাথর হয়েছিল, শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেলে মেশিন দিয়ে অপারেশন হয় শুনে ভর্তি হই। পরে জানতে পারি, মেশিন অনেক দিন হলো নষ্ট। তাই পেট কেটেই অপারেশন করতে হয়। মেশিনটি ভালো থাকলে আমাদের এত কষ্ট হতো না।’
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মাসুদ রানা বাদল বলেন, ‘কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য অত্যাধুনিক লিথোট্রিপসি মেশিন থাকলে রোগীদের কাটাছেঁড়া ছাড়াই অপারেশন করা সম্ভব হবে। কিন্তু কেনার পর থেকেই সেই মেশিন নষ্ট। মেশিনটি চালু থাকলে দরিদ্র রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিগুণ টাকা গুনতে হতো না।’
এ বিষয়ে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য ব্যবহৃত লিথোট্রিপসি মেশিনটি ক্রয় করার পর থেকেই নষ্ট। আর এই মেশিন চালুর উদ্যোগ আমরা কীভাবে নেবো। ক্রয় করার পর থেকেই মেশিন নষ্ট। মেশিনটি ইন্সটলই হয় না। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরও এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।’
আরও পড়ুন: