রবিবার

২০ এপ্রিল, ২০২৫
৬ বৈশাখ, ১৪৩২
২২ শাওয়াল, ১৪৪৬

মানিকগঞ্জের ভাষা শহিদ রফিক সেতুতে দফায় দফায় অবৈধ টোল আদায়ের চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১৬:১৭

আপডেট: ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:৩৬

শেয়ার

মানিকগঞ্জের ভাষা শহিদ রফিক সেতুতে দফায় দফায় অবৈধ টোল আদায়ের চেষ্টা
ভেঙ্গে ফেলা টোলের রুম এবং অভিযুক্ত কফিল উদ্দিন। কোলাজ: বাংলা এডিশন

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের শেষ সীমানায় অবস্থিত ভাষা শহিদ রফিক সেতুতে এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার ছত্রছাত্রায় দফায় দফায় অবৈধভাবে টোল আদায়ের চেষ্টা করছে স্থানীয় কিছু কুচক্রীমহল।

গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই সেতুতে টোল বন্ধ করে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

কিন্তু, এর কিছুদিন পর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একটি অসাধু পক্ষ সেতুতে টোল আদায় শুরু করে। খবর পেয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ জনতা ও স্থানীয়রা টোল প্লাজার কাউন্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

স্থানীয়দের বিক্ষোভে কিছুদিন টোল আদায় বন্ধ থাকলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই কুচক্রী মহল আবারও অবৈধভাবে টোল আদায় শুরু করে। কিন্তু, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে জানালে শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনী শহিদ রফিক সেতুর টোল প্লাজায় আকস্মিক অভিযান চালায়। এ সময় টোলের নামে অবৈধ চাঁদাবাজরা পালিয়ে যায়।  

শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাতে পালিয়ে যাওয়া চাঁদাবাজরা আবারও সেতুতে টোল আদায় শুরু করেছে। বাংলা এডিশনের পক্ষ থেকে এ সময় অবৈধ টোলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানায়, সাভার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি পরিবহনখাতের প্রভাবশালী নেতা কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে টোল আদায় চলছে।

কথাবার্তার এক পর্যায়ে অবৈধ টোল আদায়কারীরা জানান, আওয়ামী দোসর লুতফুর নামে এক ব্যক্তি টোলের ইজারার দায়িত্বে ছিলেন। লুতফুর ৫ আগস্টের পর একাধিক মামলার আসামি হয় এবং পালিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুটি ২০০০ সালে ২৬ জানুয়ারী উদ্বোধনের সময় থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাব বজায় রেখে টোলের ইজারার দখল (নিজ) নিয়ন্ত্রণে রাখেন লুতফুর।

৫ আগস্টের ঐতিহাসিক পট-পরিবর্তনে পর কয়েক দফায় অবৈধ টোল বন্ধ হলেও বারবার রাজনৈতিক ছত্রছাত্রায় একদল কুচক্রী মহল তা আবারও শুরু করার পাঁয়তারা করছে, যাতে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ।

অবৈধ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে এ দফায়ও বিক্ষুব্ধ জনতা প্রশাসনকে জানালে শনিবার দুপুর নাগাদ সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়ে টোল প্লাজা বন্ধ করে দেয়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, প্রথম দফার মতোই সেনাবাহিনীর অভিযানের পর শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অবৈধ টোল আদায়ের জন্য নবনির্মিত কক্ষ ভেঙ্গে দিয়েছে।  

অবৈধ টোল আদায়ের বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিনের কাছে মোবাইলে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বাংলা এডিশনের কাছে দায় স্বীকার করেন। কফিল উদ্দিন বাংলা এডিশনকে বলেন, লুতফুরের অবর্তমানে আমার নির্দেশে টোল ওঠছে। আমিই টোল আদায় করার জন্য বলেছি।

টোল আদায় বৈধ কিনা জানতে চাইলে কফিল উদ্দিন জানান, তিনি বৈধভাবে টোল আদায় করছেন। যদিও কিভাবে এটি বৈধ সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

ভাষা শহিদ রফিক সেতু টোল আদায়ের বৈধতা ও কার্যপ্রণালীর বিস্তারিত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে সড়ক ও জনপথ বিভাগে আবেদন জমা দেন এক সাংবাদিক। ওই সাংবাদিক বাংলা এডিশনকে জানান, সেতু ভবন কাঙ্ক্ষিত তথ্য দিতে গড়িমসি করছে।

banner close
banner close