স্বল্পমূল্যে তৃনমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে রয়েছে ৪৮৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দৈনিক হাজার হাজার নিন্মমধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত শ্রেণীর মানুষ এসব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্বল্পমূল্যের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকেন।
তবে বাড়তি টাকা না দিলে কাঙ্খিত সেবা মেলেনা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ওয়ার্ড বয় আলমগীর-সাইফুল সিন্ডিকেটে জিম্মি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ ও প্যাথলজিসহ সব বিভাগে চিকিৎসা সেবা পেতে হলে ওয়ার্ড সিন্ডিকেটকে দিতে হয় সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও অতিরিক্ত টাকা। নয়তো সেবা মেলেনা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনেরা জানান, যেসব রোগী দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য কারণে ড্রেসিং করতে আসেন তাদের সবাইকে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। টাকার পরিমান নির্ধারণ হয়ে থাকে রোগীর সেলাই বা প্লাস্টারের ধরনের ওপর।
সোমবার রাতে উপজেলার খয়েরহুদা গ্রামের আকাশের হাত কেটে গেলে চিকিৎসা নিতে আসেন জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে সেলাই বাবদ তার কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪০০ টাকা নেন ওয়ার্ড বয় আলমগীর হোসেন। সেলাই দিতে ৩০০ টাকা নেয়া হয় জনৈক হেলাল উদ্দিনের ছেলের কাছ থেকে।
গত রোববার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ফয়সাল, সাগর, হাসেম,বাবুলসহ কয়েকজন চিকিৎসা নিতে আসলে তাদের থেকেও অতিরিক্ত ৬০০টাকা নেন সাইফুল হোসেন ও আলমগীর হোসেন।
হাসেম নামের এক রোগী জানান, রোববার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় তার চোখে ও মাথায় কাচ ডুকে যায় এছাড়া পায়ে মারাত্মক ভাবে আঘাত পান তিনি। তার কাছ থেকে ড্রেসিং ও ব্যন্ডেজ করা বাবদ ৬০০ টাকা নেন সাইফুল।
রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় আলমগীর হোসেন জানান, রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেয়া ভূল হয়েছে,আমাকে মাফ করে দেন। দ্বিতীয় বার এভূল আর করবো না।
বিষয়টি অস্বীকার করে আরেক ওয়ার্ড বয় সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম।
টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মবগুল হাসান বলেন, ওয়ার্ড বয়দের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে সিসিটিভি ক্যমেরা লাগানো হয়েছে যাতে তাদের সকল কর্মকাণ্ড রেকর্ড রাখা হয়। ইতোমধ্যে আলমগীরকে আমি তার কাজের যায়গা থেকে সরিয়ে নিয়েছি। সাইফুলকেও সরিয়ে দেব। মূলত জনবল সংকট রয়েছে। নতুন সেটাপ হবে। চিকিৎসা সেবা গ্রহীতারা কাঙ্খিত সেবা পাবে।
আরও পড়ুন: