সোমবার

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
২১ মাঘ, ১৪৩১
৪ শা’বান, ১৪৪৬

সংবাদ প্রকাশের জেরে বাংলা এডিশনের সাংবাদিকের ওপর বিএনপি নেতাদের হামলা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১২:৪১

শেয়ার

সংবাদ প্রকাশের জেরে বাংলা এডিশনের সাংবাদিকের ওপর বিএনপি নেতাদের হামলা
সুজন মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সুজন মাহমুদ নামে এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় রাজীবপুর বাজার কম্পিউটার গলিতে ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমানের অনুসারী বলে জানা গেছে।

৩ জানুয়ারি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোখলেছুর রহমানের নামে বাংলা এডিশনে 'স্ব-পদে বহাল অধক্ষ্য, নেপথ্যে উপজেলা বিএনপি' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ওই সাংবাদিক। এরই জের ধরে বাংলা এডিশনের রৌমারী-রাজীবপুর প্রতিনিধি সুজন মাহমুদের ওপর উপজেলা বিএনপির সাবেক ওই সভাপতির অনুসারীরা হামলা করে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান নামে নিউজ করায় বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির হোসেন ও কৃষক দলের সদস্য সচিব মো. কাশেম এর আগে সুজন মাহমুদের বাসায় গিয়ে অপহরণের হুমকি দিয়েছিল। এর পর ৫ জানুয়ারি সুজন মাহমুদ উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান, শামীম আহম্মেদ, সোহেল রানা, সাব্বির হোসেন ও মো. আবুল কাশেমের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

সাংবাদিক সুজন মাহমুদ বলেন, ‘আমি আজ সারাদিন কোদালকাটিতে সংবাদ সংগ্রহের কাজে ছিলাম। সন্ধ্যা ৬টায় রাজীবপুর বাজারে গিয়ে আমার সহকর্মীদের সঙ্গে বাজারে চায়ের আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, সাব্বির হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক শফি আলম, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, যুবদল কর্মী রুবেল, ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল এসে আমার ওপর আক্রমণ করে। এ সময় সঙ্গে থাকা আমার সহকর্মীরা আমাকে হামলার হাত থেকে রক্ষা করে একটি দোকানে বসিয়ে রাখে। মারমুখী দুর্বৃত্তরা দোকানের ভিতরে ঢুকে আমাকে আক্রমণ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা ও ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন তোর কতবড় সাহস তুই নিউজ করছিস আবার থানায় অভিযোগ দিস। তোকে আজকে তোর কোন বাবা বাঁচায় দেখবো।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক সুজনসহ কয়েকজন সাংবাদিক গলিতে দাড়িয়ে ছিল। হঠাৎ করে ৩০ থেকে ৩৫ জনের মতো লোকজন সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপর হামলা চালায়।

উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, ‘সাংবাদিক সুজন মাহমুদ আমাদের এলাকার ছেলে, আমরা তাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সে বিএনপি নেতাদের নামে বিভিন্ন ধরণের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। এই ঘটনায় আজ আমরা বাজারে তার কাছে জানতে গিয়েছিলাম সে আওয়ামীলীগের হয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে লেগেছে কিনা। এর বাইরে তার সাথে কিছুই ঘটেনি।’

রাজীবপুর উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি নির্বিবাদী মানুষ। বর্তমানে জেলা বিএনপির কমিটির কাজে জেলা নেতাদের সাথে ঢাকায় অবস্থান করছি। উপজেলায় ওই সাংবাদিকের সাথে কি ঘটেছে আমি জানি না। তবে আমার অনুসারীরা যদি কোনো সাংবাদিকের সাথে খারাপ কিছু করে থাকে তবে আমি গিয়ে তার বিচার করবো’