শুক্রবার

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
২ ফাল্গুন, ১৪৩১
১৫ শা’বান, ১৪৪৬

মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরির প্রতিবাদে পার্ক কর্মচারীদের হামলায় আহত ৩০ শিক্ষার্থী

ধামরাই প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১২:১৯

আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১২:৩১

শেয়ার

মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরির প্রতিবাদে পার্ক কর্মচারীদের হামলায়  আহত ৩০ শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থীদের উপর হামলা। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার ধামরাইয়ে বির্তকৃত আলাদিন পার্কে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্কের কর্মচারীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত হাসান আল মুত্তাহিদ নামের এক শিক্ষার্থীকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।

ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকায় অবস্থিত আলাদিন পার্কের ভেতরে ও বাইরে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মিরপুর বনফুল গ্রিনহার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মরিয়ম জামিলা বলেন, বহিরাগত লোক ডেকে এনে পার্কের লোকজন মিলে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। আমাদের ৮-১০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রায় ১৬ জন শিক্ষার্থী ও ১ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। পার্কের লোকজন  লোহার রড, বাশের লাঠি, কাঠ দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সুধীর কুমার মন্ডল বলেন, লোকজন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তবে সব মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে পার্কের মালিকের ছেলে রিফাত ও ম্যানেজার বাইরে থেকে লোকজন এনে আমাদের ওপর হামলা চালায়। শিক্ষকরা চোর-ডাকাত নই। তারা লোহার রড, বাশের লাঠি দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

সহকারী অধ্যাপক জাকিদুল ইসলাম বলেন, কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ প্রায় ৬০০ জন ধামরাইয়ের আলাদিন পার্কে পিকনিকে যাই। ওয়াটার পার্কের লকারে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ না দেখে উত্তেজিত হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী পার্কের কয়েকটি গ্লাস ও চেয়ার ভেঙে ফেলে। পরে আমরা পার্কের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হই এবং বিষয়টি মিটে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে পার্কের লোকজন ও এলাকাবাসীরা এসে শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

নারী শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গাড়িতে উঠে বসলে তাদের উপরও হামলা চালায়। তারা ৮টি বাস ভাঙচুর করে। পার্কের মালিকের ছেলে ও ম্যানেজারের নেতৃত্বে পার্কের স্টাফসহ স্থানীয় এলাকাবাসী আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলা করে। রিপন হালদার নামে আমাদের এক শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন এবং হাসান আল মুত্তাহিদ নামে কলেজ শাখার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়ে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে।

পার্কের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বলেন, একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা পার্কে ভাঙচুর করে। প্রথমে সব মিটমাট হলেও বিকেলে শিক্ষার্থীরা যাওয়ার সময় ফের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পার্কের মালিকের ছেলে ও পার্কের ডিরেক্টর রিফাত হোসেন বলেন, প্রথমে একজন শিক্ষার্থীর মোবাইল হারানো গেছে এমন খবর পাওয়া যায়। পরে শিক্ষার্থীরা ওয়াটার পার্কের যে কয়জন স্টাফ ছিল তাদের মারধর করে এবং সেখানে ভাঙচুর করে। আমাদের লোকজনও তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসেও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় ও গাড়ি ভাঙচুর করে। উভয়পক্ষের লোকই আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, মারামারির ঘটনায় ছাত্রদের পক্ষে শিক্ষক বাদী হয়ে মামলা করা হয়েছে। এজাহারনামীয় ৪ জন এবং অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।