
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ১২ ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এঘটনায় শনিবার রাতে কুমারখালী থানায় আমজাদ আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫ -২০ জনকে। এ মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার আদালতে মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কশবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন - উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা আদালত প্রামাণিক (৬০)। তার পিঠে ধারালো অস্ত্রের কোপের ক্ষত রয়েছে। একই গ্রামের তাহের প্রামাণিকের ছেলে রাকিব প্রামাণিক (৩৫)। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং স্বপন মণ্ডলের স্ত্রী ইতি খাতুন (৩৭)। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও গুরুতর অসুস্থ থাকায় গ্রেফতারকৃত তাহের প্রামাণিকের আরেক ছেলে রাজিব প্রামাণিককে (৩২) পু্লিশ পাহাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রাখা রয়েছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, কশবা গ্রামের আদালত প্রমাণিক, তার ছেলে জিসান প্রমাণিক, তাহের প্রমাণিকের ছেলে রাজিব ও রাকিব, হাসেম সরদারের ছেলে শুভ, আজমতের ছেলে রাহিম, শহীদ কাজীর ছেলে ছালাম কাজী, মিজানুর রহমান মন্টু, বিল্লাল হোসেন, শহীদ হোসেন, মন্টু কাজী, ঝন্টু কাজী, জিন্দার শিকদার, সাইদ্লু শিকদার, সাজেদা খাতুন। তারা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কসবা গ্রামে মন্টু কাজী গ্রুপের সঙ্গে আদালত প্রামাণিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিলো। কাজী গ্রুপের লোকজন চাষাবাদের পাশাপাশি পদ্মা নদীতে মাছ ধরার কাজ করেন। নদীতে তাদের বেশকিছু ডিঙি নৌকা রাখা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে প্রামাণিক গ্রুপের সালাম কাজী গ্রুপের পাঁচটি নৌকার তলা ছিদ্র করছিল। সেসময় সালামকে হাতেনাতে ধরে কিছুক্ষণ আটকে রাখার পরে ছেড়ে দেন কাজী গ্রুপের লোকজন। পরে সালাম দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটাসহ তার লোকজন নিয়ে কাজী পাড়ায় আসে। সেসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দুপক্ষের অনন্ত ১৫ জন আহত হন।
এ বিষয়ে আদালত প্রামাণিক বলেন, কাজী গ্রুপের লোকজন আমাদের একটা ছেলে আটক করে রেখেছিল। তা জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের সাতজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রামাণিক গ্রুপের কয়েকজন নারীরা বলেন, আমাদের লোকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধী। সেই সুযোগে জাদু কাজী, মাদু কাজীসহ ১৫ -২০ জন এসে আমাদের সব ঘর ভাংচুর করেছে। গরু ও মালামাল নিয়ে গেছে তারা৷
প্রামাণিক গ্রুপের রাজিব বলেন, আমরা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভর্তি হয়েছি৷ হাসপাতাল থেকে সকালে তিনজনকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। আমরাও মামলা করবো।
কাজী গ্রুপের মামলার বাদী আমজাদ আলী বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় প্রামাণিক গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সুষ্ঠ বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, মাছ ধরা নৌকা ছিদ্র করাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একপক্ষ মামলা করেছে। সেই মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অপরপক্ষ এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেনি। এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: