
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বদনপুর গ্রামের মাসুদ রানা রঞ্জু হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একইসাথে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- একই গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে হুমায়ুন কবির ও মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ সুলতানা। মঙ্গলবার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত রোববার রাত ৮ টার দিকে বদনপুর গ্রামের একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে রঞ্জুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রঞ্জু বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরপরই দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এরপরই হুমায়ুনকে হেফাজতে নেয়া হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
রঞ্জু একই এলাকার মিজানুর রহমানের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন৷ এরই মধ্যে বুঝতে পারেন মিজানুরের স্ত্রী অর্থাৎ ছাত্রীর মা শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে এলাকার হুমায়ুন কবিরের পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে৷
শাহানাজ ও হুমায়ুন কবিরের মধ্যে কখন কি কথা হয়, সে বিষয়টি রঞ্জু জেনে যেত কোনো মাধ্যমে। তাদের মোবাইল ফোনে কথা বলার বিষয়টি শাহানাজের স্বামী মিজানুর রহমান স্থানীয় লোকজনকে জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ুন জানান, হত্যার ৫-৬ দিন আগে রাতে শাহানাজ তাকে মোবাইলে ফোনে বলে যে, রঞ্জু আমাদের কথাবার্তা রেকর্ড করে রাখছে। তাকে মেরে ফেলতে হবে সে আরও বলে মারতে পারলে, আমার সাথে কথা বলবা, না পারলে কথা বলবা না। আমি বলি ঠিক আছে, মেরে ফেলব। উক্ত কারণে আমি রঞ্জুকে হত্যার পরিকল্পনা করি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দুইদিন আগে আমি রঞ্জুকে বলি, আমি আগামী রোববার আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। তখন রঞ্জু বলে যে, আমিও আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। সে মোতাবেক রোববার সকাল ৯টার দিকে আমি আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দিতে যাই এবং রঞ্জু’ও তার জমিতে পানি দেওয়ার জন্য আসে।
আমার জমিতে পানি দেওয়া শেষে বেলা ১২ টার দিকে রঞ্জু তার জমিতে পানি দেয়া শুরু করে। এ সময় আমি রঞ্জুর পিছনে পিছনে ভূট্টা ক্ষেতের ভিতরে যেয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পিছন থেকে কোদাল দিয়ে রঞ্জুর মাথার বাম পার্শ্বে স্বজোরে আঘাত করলে রঞ্জু কাত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আমি রঞ্জুকে আরও দুটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে কোদাল ক্যানেলের মধ্যে রেখে বাড়ীতে চলে আসে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামী হুমায়ুন কবির এ হতার ঘটনা বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এদিকে ঘটনার পরদিন নিহত রঞ্জুর পরি পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলায় হুমায়ুন কবির ও শাহানাজ সুলতানাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: