বুধবার

৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৬ বৈশাখ, ১৪৩২
,

চালু হচ্ছে যমুনা রেলসেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ মার্চ, ২০২৫ ১০:৩২

শেয়ার

চালু হচ্ছে যমুনা রেলসেতু
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের বৃহত্তম রেলসেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে

যমুনা নদীতে বর্তমান সড়ক সেতুর পাশে আরেকটি নতুন রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে জাপানের অর্থায়নে। এই রেলসেতুতে আসা ও যাওয়ার দুটি লাইন রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে একটি লাইন দিয়ে আসা-যাওয়া করে। এখন আর যমুনা সড়ক সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল করে না। তবে ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রেলসেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হবে।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর সড়ক সেতু চালু হয়। ওই সেতুতে শেষ মুহূর্তে রেল যুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৬ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ার পর ট্রেন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করত।

নতুন রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা।

নতুন সেতুতে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তবে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল নির্ধারিত করে দিয়েছে। তবে এর চেয়েও কম গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

যমুনা সড়ক সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩৮টি ট্রেন চলাচল করেছে। চাহিদা থাকার পরও লাইন ও সেতুর সক্ষমতা না থাকায় ট্রেন বাড়ানো যায়নি। এমনকি ভারী মালবাহী ট্রেন চলাচলেও বাধা ছিল। নতুন সেতু দিয়ে অধিক ট্রেন এবং মালবাহী ট্রেন চালানো যাবে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

যমুনা নদীর বুকে রেলসেতু। ১৮মার্চ সেতুর উদ্বোধন করা হবেফাইল ছবি: সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সৌজন্যে

 

৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এই ব্যয়ে জাইকা অর্থায়ন করছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পের আওতায় সেতুর দুই প্রান্তে সাড়ে সাত কিলোমিটার দুই লাইনের সংযোগ রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৩১ কিলোমিটার মিশ্র গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া রেলওয়ে সেতু জাদুঘর নির্মাণসহ আরও কিছু কাজ যুক্ত করা হয়। প্রকল্পের মূল কাজের একাংশ করেছে জাপানের ওবাইয়েশি কোম্পানির নেতৃত্বাধীন ঠিকাদারদের একটি জোট। আরেকটি কাজ করেছে জাপানের ইশিকাওয়াজিমা-হারিমা হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি ও সুমিতোমো মিটসুই কনস্ট্রাকশন কোম্পানি যৌথভাবে। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও ছিল জাপানি।

প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পাল্টে যমুনা রেল সেতু রাখা হয়।

যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সেতু চালুর ফলে পুরোনো যমুনা সড়ক সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করছে না। এখন মূল সেতু পার হতে ট্রেনে লাগবে ২-৩ মিনিট। আর দুই পারের স্টেশন সয়দাবাদ ও ইবরাহিমাবাদের মধ্যে দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। এই অংশ পার হতে ৭ মিনিটের বেশি লাগবে না। নতুন সেতু দিয়ে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যাতায়াত সময়ও কমবে বলে জানান তিনি।

 

 

 

banner close
banner close