
মানিকগঞ্জে ফসলি জমির টপসয়েল কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরিবেশ আইন অমান্য করে রাতের আঁধারে স্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কাটা হচ্ছে দেধারসে। ফলে ধ্বংস হচ্ছে কৃষি জমি। এতে করে জমিগুলো একের পর এক ডোবানালা ও বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে।
এ নিয়ে গত এক মাস ধরে তিন ফসলী জমির মাটিকাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে ঘুরলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রশাসনের এমন অবজ্ঞায় হতাশ ভুক্তভোগী অভিযোগকারী।
জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ি মৌজায় রাতের আঁধারে তিন ফসলী জমিতে চলে মাটি কাটার মহা উৎসব। প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করা হলে নামমাত্র পুলিশ পাঠিয়ে দায়সারা অভিযান চালানো হয় ।
অভিযোগকারী আব্দুল ওহাব আলী জানান, পুটাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ি মৌজায় গভীর গর্ত করে প্রকাশ্যে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল । এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও তা বন্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মাটিকাটা বন্ধ করতে গেলে উল্টো তাকে হুমকি দমকির শিকার হন।
ওহাব আলী আরও জানান, গেল ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদর থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর জমির মাটি কাটা বন্ধ করতে অভিযোগ করি । কিন্ত প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না । উল্টো তিনিই হয়রানি হচ্ছেন। প্রশাসনের এমন ভেলকিবাজিতে হতাশ ভক্তিভোগী অভিযোগকারী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ি মৌজায় মানিকগঞ্জ সিংগাইর সড়কের পার্শ্বে রাতের আঁধারে তিন কৃষি জমি কেটে ডোবায় পরিণত করেছে মাটি ব্যবসায়ীরা। এতে আশপাশের জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে এই মাঁটিগুলো। বিভিন্ন জায়গায় এ মাঁটিগুলো বিক্রি করছে বলে খবর পাওয়া যায়।
একাধিক স্থানীয়রা জানান, এসব মাঁটি রাতের আঁধারে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমির উপরের অংশ ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা ভরাট কাজে। এতে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। তৈরি হয়েছে ডোবা। স্থানীয়রা আরও জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কারো বাধা মানছেন না । প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গভীর রাতে মাটি কাটা হয়।
অভিযোগ উল্লেখ করা হয়- কোনাবাড়ি মৌজার আর এস ১৭ খতিয়ান এবং ৩৮ খতিয়ানের ভূমি স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী পেয়ারা বেগমসহ ১০/১৫ জন মিলে জোরপূর্বক ভাবে তিন ফসলী জমির মাটি বিক্রি করছে ।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন জানান, তিন ফসলি জমি কাটার কোন নিয়ম নেই । অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল । ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি । আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: