শনিবার

৫ এপ্রিল, ২০২৫
২২ চৈত্র, ১৪৩১
৭ শাওয়াল, ১৪৪৬

মাথায় গুলি নিয়েই মারা গেলেন জুলাই আন্দোলনে আহত হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫ এপ্রিল, ২০২৫ ০৭:১৪

শেয়ার

মাথায় গুলি নিয়েই মারা গেলেন জুলাই আন্দোলনে আহত হৃদয়
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়া হৃদয় হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত পটুয়াখালীর বাউফলের হৃদয় হোসেন (১৮) মারা গেছেন। শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)।

হৃদয়ের হোসেন উপজেলার বাউফল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম যৌতা-অলিপুরা গ্রামের আনসার হাওলাদার ও মোরশেদা বেগম দম্পত্তির সন্তান। পরিবারের চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে সবার ছোট ছিল।

হৃদয়ের পরিবার জানায়, গত ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে বের হলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় মাথায়, বুকে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয় হয়। সে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের একজন কর্মী ছিল।

হৃদয়ের ভগ্নিপতি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, হৃদয় খুব সহজ-সরল প্রকৃতির ছিল। অভাবী পরিবারের প্রয়োজনেই চাকরির খোঁজে রাজধানী ঢাকায় যায় সে। হৃদয়ের বাবা আনছার হাওলাদার পেশায় একজন কৃষক। মা মোর্শেদা বেগম গৃহিনী।

তিনি বলেন, ‘অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। খুনিদের ফাঁসি চাই আমরা।’

ছেলের মৃত্যুতে অনেকটাই বাকরুদ্ধ হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদার। অশ্রুভেজা চোখে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, ‘আমার কিছু রইলো না। সবই শেষ।’

হৃদয় হোসেনের মৃত্যুতে জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি এক শোকবার্তায় জানান, ‘জুলাই যোদ্ধা হৃদয়কে আল্লাহ শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। হৃদয় বাউফলবাসীর গর্ব ছিল। আমি তার চিকিৎসা ও যাবতীয় বিষয়ে দেখভাল করছিলাম। আল্লাহ তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সহকারী অ্যাটর্নী জেনারেল আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, জুলাই বিপ্লবে আহত হৃদয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। পরিবারটিকে অর্থনৈতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে জানান তিনি।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আ. রউফ বলেন, ‘হৃদয়কে বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলা হয়। কিন্তু সময়মতো সেখানে নিতে পারেনি পরিবার। বিকেল তার মৃত্যু হয়।’

শনিবার (০৫ এপ্রিল) সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

 

 

 

banner close
banner close