শনিবার

১৯ এপ্রিল, ২০২৫
৫ বৈশাখ, ১৪৩২
২১ শাওয়াল, ১৪৪৬

সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা, এসপি বললেন 'মিডিয়া ছুটাই দেবো'

প্রতিনিধি,রৌমারী (কুড়িগ্রাম)

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল, ২০২৫ ১৯:২৩

আপডেট: ১১ এপ্রিল, ২০২৫ ১৯:২৩

শেয়ার

সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা, এসপি বললেন 'মিডিয়া ছুটাই দেবো'
পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান। ছবি: বাংলা এডিশন

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভিডিও ও ছবি ধারণ করার কারণে কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) নির্দেশে এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে।

জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর শহরের মোড় এলাকায় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া এক মা-মেয়েকে উত্যক্ত করার অভিযোগে স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান।

এ সময় স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও চিলমারী সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভিডিও ও ছবি ধারণ করছিলেন। তখন পুলিশ সুপার তার দেহরক্ষীকে ফোন কেড়ে নিতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী দেহরক্ষী সাংবাদিকের ফোনটি নিয়ে ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলেন।

এতেই থেমে থাকেননি পুলিশ সুপার। তিনি সাংবাদিককে উদ্দেশ করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “মিডিয়া ছুটাই দেবো।”ঘটনার পর চিলমারীসহ পুরো জেলার সাংবাদিক সমাজ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম জানান,“ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার আসার খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে ভিডিও ও ছবি তুলছিলাম। এ সময় তিনি আমার ওপর চড়াও হন। পরিচয় দেওয়ার পর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ফোন কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এক পুলিশ সদস্য ফোনটি নিয়ে আমার ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও মুছে দেন।”

রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন,“আমি ওই সময় কিছুটা দূরে ছিলাম। পরে বিষয়টি সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের কাছ থেকেই শুনেছি।”

কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান টিউটর বলেন,“কোনো সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন না। এর জন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ, তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাই তার আচরণ হতে হবে সব নাগরিকের প্রতি সম্মানজনক।”

কুড়িগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকরা অভিযোগ করে জানান, এসপি সাহেবের এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। সাংবাদিকদের দেখলে মনে হয় তার মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। এর আগেও তিনি সাংবাদিকদের নাম্বার ব্লক করার ঘটনা ঘটিয়েছেন।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন,“বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর এসপি স্যার এসেছিলেন। তবে ফোন কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।”

বাংলা এডিশনের সাংবাদিকের নাম্বার ব্লক রাখায় এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

banner close
banner close