
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি তিনতলা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক ও উপসহকারী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতারের বিরুদ্ধে। খোদ ঠিকাদার আর এস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী এমরান কাদের চৌধুরী এ অভিযোগ করেছেন।
এদিকে অর্থ নয় ছয়ের দায় স্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন ‘আপনি ধরলে অনেক কিছুই ধরতে পারেন। এ দায় আমার একার নয়, ঠিকাদারের উপরও বর্তায়।’ জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি পিডিপি ৪ প্রকল্পের আওতায় আমবাড়িয়া শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা।'
ঠিকাদার আর এস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী এমরান কাদের চৌধুরী বলেন, আমার বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায়। তাড়াশের স্থানীয় আব্দুল মমিন নামে এক ব্যক্তিকে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক ও তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার আব্দুল মমিনকে ম্যানেজ করে নির্মাণাধীন আমবাড়িয়া শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত করেছেন। প্রায় আড়াই বছর আগে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতদিনে গেট বিম ও কলাম ঢালাই কাজ শেষ হয়েছে। বিল উত্তোলন করা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা। আমি দূর থেকে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখতে পারিনি। এ সুযোগে অর্থ আত্মসাত করেছেন দুই কর্মকর্তা। এখন টাকার অভাবে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।'
অপরদিকে আমবাড়িয়া শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শঙ্কিত। কবে শেষ হবে নির্মাণ কাজ। এ বিদ্যালয়টি ১৯৬৫ সালে স্থাপিত। প্রত্যন্ত অঞ্চলের আশপাশের কয়েক গ্রামের শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। শ্রেণি কক্ষের সংকটে পাঠদান ব্যহত হয়। দ্রুত সময়ে বিদ্যালের নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন বলেন, আগামী জুন মাসে পিডিপি ৪ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। বার বার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হককে। তাগাদা দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে গেছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আমবাড়িয়া শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের গেট বিম ও কলামের কাজ শেষ হয়েছে। নতুন ভবনের ভেতর মাটি ফেলে রেখেছে।
তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন ‘আপনি এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হকের সাথে দেখা করুন। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি সেভাবে কাজ করেছি।’
সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, বিল উত্তোলন করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর যৌথ স্বাক্ষরে। আপনি তাদের সাথে কথা বলুন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এক মাসও হয়নি তাড়াশে আসার। আমি এ ধরনের কোন বিলে স্বাক্ষর করিনি।
আরও পড়ুন: