
ছবি : বাংলা এডিশন
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হাজিরপাড়া-দোছড়ি সড়কটি কয়েক বছর ধরে ছিল বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিদিন ঠেকেনি। ৫ আগস্টের পর থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসাদ এন্টারপ্রাইজ। ফলে মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়া সড়কটি আবারও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে সড়কের কাজ। দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাজিরপাড়া থেকে দোছড়ি পর্যন্ত ৪ কিলােমিটারের এই সড়কটি প্রায় ২০ বছর ধরে সংস্কারবিহীন ছিল। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বছর-দুয়েক আগে বিশ্বব্যাংক থেকে বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করে এলজিইডি। সড়কের ৩০-৪০ শতাংশ মতো কাজ চলার পর বেঁধেছে বিপত্তি। নিখোঁজ হয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসী বলেন, সড়কের বেহাল দশায় পথচারী ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পােহাচ্ছে। যতটুকু সংস্কার করা হয়েছে, কালবৈশাখীর হালকা ঝড়ে সেটিও ভাঙনের মুখে পড়েছে। বিভিন্ন কাজ অসম্পন্ন থাকায় সড়কে নতুন করে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরে গেছে। বিভিন্নে অংশে দু-পাশের মাটি সরে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দোছড়ি থেকে উখিয়া বাজারে হাজারো বাসিন্দা চলাচল করে। এ ছাড়া অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর যাতায়াত এই সড়ক দিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্রপ্রতিনিধি মোহাম্মদ সোহেল বলেন, সাধারণ মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ তো হচ্ছেই, এমনকি মরদেহ নিয়ে যেতেও কষ্ট হচ্ছে এলাকাবাসীর। কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসাপাতালে নেওয়া যায় না বলে দাবি তার।
সোহেল বলেন, প্রতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতে পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়। হাজিরপাড়া-দোছড়ির ৪ কিলোমিটারের এই সড়কটির সংস্কারকাজ ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ করার কথা থাকলেও এখনো ৬০-৭০ শতাংশ কাজ বাকি থেকে গেছে, যা খুবই দুঃখজনক। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ সম্পন্ন না হলে এলাকাবাসী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসাদ এন্টারপ্রাইজ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে তিনি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেল বছরের ৫ আগস্ট থেকে লাপাত্তা রয়েছে ওই সড়কের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আসাদ। তিনি কক্সবাজার জেলা যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে ঠিকাদার আসাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
সড়কটির দুরবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী রুকুনুজ্জামান খান বলেন, দেড় বছর আগে সড়কটির কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতিতে কাজ বন্ধ রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লোক পাঠিয়ে কাজ শুরু করা হবে জানিয়ে প্রকৌশলী বলেন, বর্ষার আগেই সড়কের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বাংলা এডিশন কে বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে এলজিইডিকে দ্রুত কাজ শেষ সম্পন্ন করতে বলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: