শুক্রবার

১৮ এপ্রিল, ২০২৫
৫ বৈশাখ, ১৪৩২
২০ শাওয়াল, ১৪৪৬

আসন্ন বাজেটে যৌক্তিকভাবে কর বৃদ্ধি করা হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল, ২০২৫ ২১:১৩

আপডেট: ১০ এপ্রিল, ২০২৫ ২২:০১

শেয়ার

আসন্ন বাজেটে যৌক্তিকভাবে কর বৃদ্ধি করা হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানিয়েছেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণের চাপ বাড়ছে। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে।

বৃহস্পতিবার  চট্টগ্রামে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ব্যবসায়ীদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। দুপুরে চিটাগং চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে স্থিতিশীল হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকার কারণে নাগালে এসেছে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিও।

কিন্তু বিভিন্ন সেবা সংস্থায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমেনি।’

ব্যবসায়ীরা আসন্ন বাজেটে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাস এবং ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগবান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এনবিআরের সহযোগিতা কামনা করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বাজেট যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে এবং গতানুগতিক যে বাজেট হয়, এবার তা হবে না।’ ব্যবসায়ীদের ভ্যাট, ট্যাক্স প্রদানের ক্ষেত্রে হয়রানি দূর করে ভ্যাটের রিটার্ন ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।

ভারত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য তৃতীয় দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আমার দেখার বিষয় নয়। এই নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নিশ্চয়ই এই বিষয় বিবেচনা করবে।’

যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, দেশের জন্য কর্মসংস্থান করছেন—তাদের রিয়েল হিরো বলেও অভিহিত করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘সরকার ১৫ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়েছে। বাকি চাকরি বেসরকারি খাতে।’

 

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন অনিয়ম হওয়ায় জটিল হয়েছে। দফায় দফায় জীবন দিতে হয়, এমন জাতি কম আছে। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। আমাদের দেশকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। বড় বড় ভুল শুধরে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সহজীকরণের নামে আরো কঠিন করে ফেলছি। অটোমেশনে অনেকে আসতে চাইছে না। এবার অনলাইনে আয়করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ১৫ লাখ ৩০ হাজার অনলাইন রিটার্ন পেয়েছি। বন্ডে ব্যাপক সমস্যা আছে। আমরা পুরোপুরি অটোমেশন করতে চাই। কাউকে সরকারি অফিসে যেতে হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভ্যাটের রিটার্ন ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে দেব। অনলাইনে দিলে সিল আনার পদ্ধতি বাতিল করেছি। ভ্যাট ও আয়করে অডিট সিলেকশনে ব্যক্তি জড়িত থাকবে না। কেউ প্রতারণা করতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কর প্রদান অনেক সহজ। কর দিতে কোনো ব্যাংকে যেতে হয় না। সরকারি কোষাগারে টাকা জমা সরাসরি হওয়া উচিত। ১৯৯১ সালে ভ্যাট চালু হয় তখন যে মূল শক্তি ছিল তা কেটে দেওয়া হয়েছিল।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণের চাপ বাড়ছে। জনগণের দাবি সঠিক জায়গায় ব্যয় করা। প্রান্তিক জনগণের কাছে সরকারের সেবা পৌঁছাতে পেরেছি। দেশটা পরিবারের মতো। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে।’

তিনি বলেন, ‘রিফান্ড দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে হয়রানি আছে। আমরা এটা অটোমেশন করতে চাই।’

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা সভাপতির বক্তব্যে বলেন, চেম্বারের সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। চেম্বারের পক্ষ থেকে এনবিআরকে আয়কর বিষয়ে ১৯টি, ভ্যাটের ওপর ৪০টি ও শুল্ক সংক্রান্ত ৫৫টি প্রস্তাব দেন তিনি।

সভায় মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এরশাদ উল্লাহ, রাঙামাটি চেম্বারের নেতা মামুনুর রশিদ ও কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি বক্তব্য দেন।

banner close
banner close