ছাত্র-জনতার আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয় এবং ফ্যাসিবাদী এ শাসক দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পলায়নের এই নির্লজ্জ বিষয়কে উৎসবে পরিণত করেন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা থেকে শুুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাসহ রাষ্টযন্ত্রের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা স্বৈরাচার মদদপুষ্ট দায়িত্বশীলরা।
এক্ষেত্রে বাদ যায়নি শিক্ষাঙ্গনে আওয়ামী লেজুড়বৃত্তিতে সম্পৃক্ত ও তাদের সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক কতিপয় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
প্রতিটি ক্যাম্পাসে পদচ্যুতি-পদত্যাগের হিড়িক লেগে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ এ পর্যন্ত সর্বমোট ৭৯ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন; যা পদত্যাগের তালিকায় উল্লেখযোগ্য একটি সংখ্যা।
অথচ, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম সত্বেও সবাইকে হতবাক করে দিয়ে এখন অবধি স্বপদে বহাল রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রেজিস্ট্রার পদে থাকা তারিক হাসান।
তারিকুল হাসানের এমন ঔদ্ধত্যতা রীতিমতো বিস্মিত করেছে শিক্ষার্থীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রকাশ করছেন তাদের ক্ষোভ, দাবি করছেন পদত্যাগের। হুশিয়ারি রয়েছে আগামীকাল (মঙ্গলবার) ১১.০০টার ভেতরে পদত্যাগে অসম্মত হলে যৌক্তিক অথচ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও।
সোমবার রাতে রাবির প্রাইভেট প্ল্যাটফর্ম 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদে’ রেজিস্ট্রার তারিকুল হাসানের আল্টিমেটাম অমান্য করে স্বপদে বহাল থাকা অভিযোগ তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও মিশকাত চৌধুরী মিশু।
অভিযোগে তারা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসানকে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেয়ার পরও তিনি পদত্যাগ করছেন না। উল্টো পেছনের তারিখে একের পর এক প্রকল্প এবং অন্যান্য কাগজপত্রে সাক্ষর করছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবি তাকে আগামীকাল সকাল ১১ টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছে। অন্যথায় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে শিক্ষার্থরা।’
ফোনকলে সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা এডিশনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস আটকে আছে, আর আমরা চাইনা ক্যাম্পাসে কোনো চাটুকারিতা বা লেজুড়বৃত্তি হোক। আমরা সুন্দর একটি শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ চাই। সর্বোপরি আমরা এসবের ওপর ভিত্তি করে তার পদত্যাগ চাই।’
তাছাড়া, রেজিস্টার আন্দোলনের সময়ে ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান না করে তৎকালীন সরকারের লেজুড়বৃত্তি করেছেন বলে জানান আম্মার।
আম্মার আরও বলেন, ‘ভিসিকে যখন আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিলো তখনই একই সঙ্গে তাকেও দেয়া হয়। কিন্তু সে পদত্যাগ করেনি।’
রেজিস্ট্রার পদত্যাগ করলে তারা ফলপ্রসূ সমাধান পাবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আম্মার জানান, ‘হ্যা,অবশ্যই। আমরা সমাধান পাবো। এমনকি ক্লাস শুরু ও ভিসি নিয়োগ আরও আগাবে।’
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তারিকুল হাসানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলা এডিশনকে বলেন, ‘আমি মুলত একটি দায়িত্বে রয়েছি। যেহেতু শিক্ষার্থীরা এখন চেয়েছে, আমি তাদেরকে প্রাধান্য দেবো।’
যদিও তিনি শিক্ষার্থীদের আগে দেয়া পদত্যাগের আল্টিমেটামের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: