শনিবার

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
১৩ আশ্বিন, ১৪৩১
২৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শ্রেষ্ঠ বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রতিনিধি,দিনাজপুর

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:৩১

আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:৪১

শেয়ার

প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শ্রেষ্ঠ বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: বাংলা এডিশন

নিরক্ষরতা দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়ে ১৮৯২ সালে যাত্রা শুরু করা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১৯নং বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে এ বছর উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে।

খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামে ১৮৯২ সালে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতায় ঐ এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক আ: বকস হাজীর দানকৃত জমিতে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠান শুরুর দিকে নিরক্ষর মুক্ত এলাকা গড়তে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় বাঁশের বেড়া ও টং-এ প্রতি সন্ধ্যায় ক্লাস নেওয়া হতো।

সময়ের পরিক্রমায় এটি হয়ে উঠে প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকারী নিয়োগ অনুযায়ী ১৯৫৮ সালে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান গৌরাঙ্গ চন্দ্র রায়। এদিকে বর্তমান প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম গত ২০০৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকে সময়ের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও স্কুলের অবকাঠামো ও আশেপাশের পরিবেশ।

স্কুল ক্যাম্পাসে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পাকেরহাট থেকে বোর্ডেরহাট যাওয়ার রাস্তার পাশেই বালাপাড়া নামক স্থানে এই স্কুলের অবস্থান। পাশেই রয়েছে বালাপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। মূল সড়ক দিয়ে প্রবেশ করেই দেখা যায় ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই চলছে জাতীয় সংগীত গাওয়া ও দৈনিক সমাবেশ।

এরপরে একটু এগুলেই চোখে পড়বে নির্মাণাধীন ১টি ভবনসহ ৩ তলা ২ টি ভবন, শ্রেণীকক্ষ, ফুলের বাগান, খেলার মাঠ। মূল ভবনে রয়েছে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের কক্ষ, দেওয়ালে সু-সজ্জিত প্রাক-প্রাথমিকের শ্রেণীকক্ষ, সততা ষ্টোর, দেয়াল লিখন। তবে বিদ্যালয়ের কিছু অংশে সীমানা প্রাচীর ও মূল গেট না থাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলে প্রায় সময়ই বিপত্তি ঘটছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৪৩১ জন ছাত্র-ছাত্রী এ স্কুলে পড়ালেখা করছে। অপরদিকে তদারকি ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নরত আছেন ৫১ জন। এদের পাঠদানের জন্য আছেন প্রধান শিক্ষকসহ ১০জন শিক্ষক। তবে শিক্ষার্থী সংখ্যার চেয়ে শিক্ষক কম হওয়ায় পাঠদান দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর  চেয়ে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান, শিক্ষকদের স্বদিচ্ছা, পাঠদান ও সুষ্ঠভাবে বিদ্যালয় পরিচালনার কারণে উপজেলার শ্রেষ্ঠ হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে পরীক্ষা পদ্ধতি উঠে যাওয়ায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কিছুটা কমে গেছে বলে জানা যায়।

এইজন্য সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি ও উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মোবাইলে মেসজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের উপস্থিতির তথ্য অভিভাবকদের জানানো হয়। এছাড়াও নিয়মিত হোম ভিজিট, উঠান বৈঠক, অভিভাবক ও মা সমাবেশ করছেন স্কুলের শিক্ষকরা।

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম গত ২০২৩ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ থেকে পুরষ্কৃত হন। এছাড়া চলতি বছর এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. মাহফুজা বানু উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।