খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)'র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম খুলনার প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন। গত ১৭ অক্টোবর সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং ২০ অক্টোবর তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর সাংবাদিকদের সাথে এটিই তার প্রথম মত বিনিময় সভা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় খুবির আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমি ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তিনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতন হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। বাদ যায়নি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ও।
গত ২০ আগস্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, প্রভোস্টবৃন্দ, প্রকল্প পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ প্রায় ৭০ জন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের গত ২৯ আগস্ট এর স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সকল স্কুলের ডিন ও ডিসিপ্লিন প্রধানদের সভায় সর্বসম্মতভাবে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক হিসেবে সাময়িকভাবে জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনাসহ শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। এরপর গত ১৭ অক্টোবর সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং ২০ অক্টোবর তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, সাবেক ভিসিসহ ৭০জন পদত্যাগ করলেও তাঁর এই দায়িত্ব গ্রহনের পর শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় শিক্ষার গতি ও কার্যক্রম ফিরে এসেছে। ক্লাসের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ফিরে আসে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময়টাতে শহিদ মীর মুগ্ধ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল প্রতিযোগিতা, সীরাত কনফারেন্স আবাসিক হলগুলোতে প্রীতিভোজ, কাওয়ালী, বাউল সন্ধ্যা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাব/সংগঠনসমূহের নানামুখী কর্মকাণ্ডে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করে উদ্ভূত সমস্যা সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কাজ সচল রাখা এবং আবাসিক হলগুলোর বিদ্যমান সমস্যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দূর করা হয়। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ'র 'স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে শহিদ মীর মুগ্ধ'র পিতা, বড় ভাই ও জমজ ভাইসহ তাঁর ক্যাম্পাসের শিক্ষক, সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়ররা নানা স্মৃতিচারণ করেন।
এছাড়াও বর্তমান প্রশাসনের কিছু পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ তিনি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
মতবিনিময়কালে খুবির প্রো-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবীসহ অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন
আরও পড়ুন: