শনিবার

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
৯ ফাল্গুন, ১৪৩১
২৩ শা’বান, ১৪৪৬

মুজিবতন্ত্রের ইতি টেনে নতুন পরিচয়: বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি

বিএমইউ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১০:২১

শেয়ার

মুজিবতন্ত্রের ইতি টেনে নতুন পরিচয়: বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি
মুজিবতন্ত্রের ইতি টেনে নতুন পরিচয়: বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি। বাংলা এডিশন

শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে "বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি" করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সরকারি গেজেটে এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের ফলে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গের নাম সম্বলিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের জোরালো দাবি ওঠে। স্বৈরাচারী শাসনামলের সব ধরনের চিহ্ন মুছে ফেলার আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব জোরদার হয়।

এরই ধারাবাহিকতায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ পরিবারের নাম সম্বলিত ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নামের তালিকা প্রকাশ করেন।

মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম সংক্ষিপ্ত, সহজবোধ্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করা হোক। শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে নতুন নাম অনুমোদন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট মহল এই পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশে এটিই একমাত্র মেরিটাইম-বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় নতুন নাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি সহজ করবে এবং মেরিটাইম খাতে গবেষণা ও শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখ সারির যোদ্ধা এবং আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের পেছনে মেরিটাইমের সকল বিপ্লবী শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সবচেয়ে বড় অবদান হলো জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত ভাই-বোনদের। তাদের আত্মত্যাগের জন্যই আজ আমরা বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি পেয়েছি। প্রকৃতপক্ষে এই অর্জন শহীদদের রক্তেরই ফসল। তাদের অবদান আমরা কখনও ভুলব না।"

বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম শিক্ষার্থী প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম আশিক বলেন, "মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন আমাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল। দেশের একমাত্র মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর নাম ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ হওয়াটাই স্বাভাবিক। নানান প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত নামটি পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সামনে দেশের নাম যুক্ত হওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এই নামের মর্যাদা রক্ষা করতে এবং দেশের ব্লু ইকোনমিকে এগিয়ে নিতে আমরা শিক্ষার্থীরা বদ্ধপরিকর।"

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের যে ঐক্য ও সচেতনতা প্রকাশ পেয়েছে, তা ভবিষ্যতেও দেশের সমুদ্র অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে উদযাপনের আবহ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, নতুন নামের মাধ্যমে তারা একটি শক্তিশালী জাতীয় পরিচয় পাবেন, যা তাদের পেশাগত ও একাডেমিক অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে।