শনিবার

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
৯ ফাল্গুন, ১৪৩১
২৩ শা’বান, ১৪৪৬

অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ববি'তে প্রক্টরের দায়িত্বে পরিবর্তন, বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১২:৪৯

শেয়ার

অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ববি'তে প্রক্টরের দায়িত্বে পরিবর্তন, বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলা এডিশন

গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনায় অস্থিরতা বিরাজ করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে দুই সিন্ডিকেট সদস্যকে অপসারণের অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনে তালা লাগানো, মেয়াদ শেষ হলেও রেজিস্ট্রারের স্বপদে বহাল থাকা, সিন্ডিকেট সদস্যদের সভা প্রত্যাখ্যান, উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভেঙে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সিন্ডিকেট সভা স্থগিত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে মারধরের অভিযোগ, ও চলমান আন্দোলনের জন্য উপাচার্যের পক্ষ থেকে  দায়ী করা হয় উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার ও ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন, যদিও এ দাবিকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন তারা।।

এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের প্রকাশ্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দেন। তবে পরে তাঁরা উপাচার্য পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসে ২২ দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে তাঁদের দমানোর চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় মামলা প্রত্যাহার না করলে সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এ.টি.এম. রফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করায় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুইটি অফিস আদেশে নতুন প্রক্টর হিসেবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সোনিয়া খান-কে নিয়োগ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর মো. সাইফুল ইসলাম (সহকারী অধ্যাপক, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং) ও মো. ইলিয়াস হোসেন (সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ)-কেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ড. সোনিয়া খান ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা রক্ষায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছেন। এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান: সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থী ব্যতীত বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।মাদক সেবন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, র‍্যাগিং ও ইভটিজিংসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ক্যাম্পাসজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে, এবং অপরাধে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও হন, তবে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষ নেবে না।

এ বিষয়ে নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. সোনিয়া খান বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধ করতে এবং ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অস্থিরতা নিরসনে প্রশাসনের নেওয়া নতুন এসব পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।