রবিবার

২০ এপ্রিল, ২০২৫
৬ বৈশাখ, ১৪৩২
২২ শাওয়াল, ১৪৪৬

বর্ণিল আয়োজনে জাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

প্রতিনিধি,জাবি

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১৩:৪৩

শেয়ার

বর্ণিল আয়োজনে জাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
ছবি : বাংলা এডিশন

"নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান ও মানবতার জয়গান",  প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ পালিত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উদযাপিত হয়েছে বাঙালি জাতির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ।

বাংলা নতুন সালকে বরণ করে নিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দিবসটি উপলক্ষে সকাল সোয়া আটটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান তাঁর বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কমর্চারীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে উপাচার্য তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। উপাচার্যের বক্তব্যের পর ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানসহ বাংলা নববর্ষের গান বাজানো হয় এবং আগত অতিথিদের জিলাপী, সন্দেশ, কদমা, তরমুজ, আমের শরবত, বাতাসা, মুড়ি, খৈ ইত্যাদি বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হয়।

শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সকাল পৌনে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের সামনে থেকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্বোধনকালে উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা এক বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং বিশাল সংগ্রামের পর এবারের নববর্ষ উদযাপন করছি। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর রাষ্ট্র নির্মাণ করে আমরা একাধিকবার হোচট খেয়েছি।

তিনি বলেন, ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের দেশ গড়ার স্বপ্ন পুনরায় জাগ্রত হয়েছে। দল মত নির্বিশেষে সকলে মিলে আমরা বসবাস করবো এবং নতুন বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ হবো।উপাচার্য আরও বলেন, দেশ ও বিদেশে মানবতার বিরুদ্ধে যে অন্যায়গুলো হচ্ছে সেগুলো আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দূর করতে পারব। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় অন্যান্যের মধ্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, মহিলা ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কমর্চারী এবং জাবি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
আনন্দ শোভাযাত্রায় চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রতিবাদের প্রতিক মুষ্টিবদ্ধ হাত, শান্তির প্রতিক জোড়া পাখিসহ বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাংলা সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে সুসজ্জিত হয়ে অংশ নেন শোভাযাত্রায়।

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে আয়োজন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা। বিভিন্ন বিভাগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিভাগের বারান্দায় আলপনা আঁকা দেখা যায়। দেশীয় সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে আয়োজন করা হয় নানান অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রা, মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করে বাংলা বিভাগ৷ সন্ধ্যা ছয়টায় কলা ও মানবিকী অনুষদ সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চে বাঙ্গালী জাতির ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ, গীতনৃত্যনাট্য, যাত্রাপালর আয়োজন করে তারা।

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত  অনুষ্ঠানে ছিল পান্তা ভোজন ও প্রভাতের গান। তাছাড়া পান্তা-ইলিশ, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা, কদমা এবং দেশি ফলমুল খাওয়ার আয়োজন করা হয় বিভিন্ন বিভাগে।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং ছাত্র-কল্যাণ ও পরামর্শকেন্দ্রের আয়োজনে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল-দীন মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

banner close
banner close