বুধবার
8:31:44

৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৭ বৈশাখ, ১৪৩২
,

বর্ষবরণে আজ কোথায় কী হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১০:৩৩

শেয়ার

বর্ষবরণে আজ কোথায় কী হচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত

বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন আজ। নতুন বছরের সূচনা, পহেলা বৈশাখ। দেশজুড়ে সাজ সাজ রব, উৎসবের আমেজ। রাজধানী শহরে বর্ষবরণের অনেক আয়োজন রয়েছে আজ।

রমনার বটমূলে ছায়ানট

এটি পহেলা বৈশাখের অন্যতম বর্ণিল আয়োজন। দীর্ঘ ৫৮ বছর ধরে রাজধানীর রমনা উদ্যানের বটমূলে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এটি। ভোরে সূর্যোদয়ের মুহূর্তকে বরণ করে নেওয়া হয় গানে গানে।

তবে এই প্রথম কিংবদন্তি সংস্কৃতিজন সনজীদা খাতুনকে ছাড়া হবে ছায়ানটের বর্ষবরণ। যিনি ছায়ানটের অন্যতম সংগঠক। ২৫ মার্চ তিনি চলে গেছেন অনন্তলোকে। এবারের অনুষ্ঠানসজ্জায় থাকছে ৯টি সম্মেলক, ১২টি একক গান ও তিনটি পাঠ।

দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানে সব মিলিয়ে দেড় শতাধিক শিল্পী অংশগ্রহণ করছেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি। পাশাপাশি দেখা যাবে ছায়ানটের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে।

রবীন্দ্র সরোবরে সুরের ধারা

ছায়ানটের পাশাপাশি বর্ষবরণের আয়োজন করে আরেকটি সংগীত প্রতিষ্ঠান সুরের ধারা। যদিও প্রতিবছর এটি অনুষ্ঠিত হতো চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে।

এবার স্থান বদলে রবীন্দ্র সরোবরে বসছে আসর। ভোর ৬টা থেকেই শুরু হবে সুরের ধারার আয়োজনটি। জানা গেছে, এবারের বর্ষবরণে সুরের ধারার শিল্পীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে তিন শ শিল্পী অংশ নেবেন। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ‘স্বদেশ’।

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে শোভাযাত্রা। দীর্ঘদিন ধরে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে অনুষ্ঠিত হয়ে এলেও এবারের নাম ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হবে শোভাযাত্রা। এরপর শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে সম্পন্ন হবে। এতে ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেবেন। শোভাযাত্রায় এ বছর থাকছে সাতটি বড়, সাতটি মাঝারি এবং সাতটি ছোট মোটিফ।

জবিতে গাইবে ব্যান্ড অ্যাশেজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ উৎসবে থাকছে বিশেষ সংগীত পর্ব। এতে গাইবে ব্যান্ড ‘অ্যাশেজ’। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হবে এ আয়োজন। ‘অ্যাশেজ’ ছাড়াও এ কনসার্টে গাইবে ‘চান্দের গাড়ি’ ও ‘মেটাল ইরর’। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন থেকে কিম্ভূত, কোমল গান্ধার, অফসাইড ও একাধিক শিল্পী পরিবেশনায় অংশ নেবেন।

মানিক মিয়া এভিনিউতে সাংস্কৃতিক আয়োজন

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় জাতীয় সংসদের সামনের সড়ক, মানিক মিয়া এভিনিউতে হবে বিশেষ আয়োজন। এর অন্যতম আকর্ষণ থাকছে ড্রোন শো। ড্রোনের মাধ্যমে আকাশে ফুটিয়ে তোলা হবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের নানা স্মৃতি। সেই সঙ্গে থাকবে ব্যান্ড শো। গাইবেন ইসলাম উদ্দিন পালাকার, আহমেদ হাসান সানি, সাগর দেওয়ান, জাহিদ নিরব, পারসা, ব্যান্ড ‘অ্যাশেজ’সহ অনেকে।

গাই বাংলার গান

লোকগানের বর্ণিল আয়োজন হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ‘গাই বাংলার গান’ শীর্ষক এ আয়োজনে গাইবেন প্রখ্যাত লোকশিল্পী আরিফ বাউল। এ ছাড়া পরিবেশনায় থাকবেন সিকদার বাসুদেব, দ্যুলোক, সুরালয়, বাউল সংঘ, খোকন চিশতিসহ অনেকে। বৈশাখের প্রথম দিনে মাটির গানকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠান। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আয়োজনটি সবার জন্য উন্মুক্ত।

শহীদ মিনারে গণসংগীত

বর্ষবরণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ। বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হবে আয়োজনটি। এতে থাকবে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা, একক সংগীত, দলীয় সংগীত, একক ও দলীয় আবৃত্তি, নৃত্য, নৃ-গোষ্ঠীর পরিবেশনা ও পথনাটকসহ নানা পর্ব। অনুষ্ঠানে গাইবেন সমর বড়ুয়া, কাজী মিজানুর রহমান, আলোক দাস গুপ্ত, আবিদা রহমান সেতুসহ অনেকে। বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ।

গাইবে না ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী

প্রতিবাদী শব্দ, লোকজ সুর—এই ধারায় দীর্ঘদিন ধরে বাঙালিকে মাতিয়েছেন নন্দিত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। তাঁর দল ‘ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী’ ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত পহেলা বৈশাখে গান করে আসছিল। ঢাকার শিশু পার্কের সামনে মঞ্চ সাজিয়ে হয় এ আয়োজন। তবে ২০২০ সালে মহামারিতে ফকির আলমগীরের প্রয়াণে ছেদ পড়ে আয়োজনটিতে। পরের বছর থেকে অবশ্য পুনরায় তাঁর স্মরণে ‘নব আনন্দে জাগো’ অনুষ্ঠানটি করছে ঋষিজ। এবার সেটা হচ্ছে না। ফিলিস্তিনে ইজরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগীতের দলটি। সমর্থন রয়েছে ফকির আলমগীরের পরিবারেরও। তাদের মতে, শিল্পী বেঁচে থাকলেও এমন সিদ্ধান্ত নিতেন। কেননা তিনি নিজেও ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য গান করেছিলেন।

বৈশাখের নতুন গান

প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নতুন নতুন গান তৈরি হয়। এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। ব্যান্ড ‘প্রমিথিউস’খ্যাত শিল্পী বিপ্লব করেছেন ‘বৈশাখের গান’। গতকাল শিল্পীর ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়েছে গানটি। এর কথা, সুর ও সংগীতায়োজন সাজিয়েছেন জনি।

মিউজিক আলফা ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ হচ্ছে ‘ঢাক ঢোল বাজে’। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন শান শায়েক, সাব্বির জামান, তামান্ন প্রমি, এসকে বনি, নির্ঝর, মিতুসহ অনেকে। ওয়ালিদ হাসানের কথায় গানটির সুর-সংগীত শান শায়েক।

ক্লোজআপ খ্যাত সাজু আহমেদ প্রকাশ করেছেন ‘পহেলা বৈশাখ’। গানের কথা, সুর শিল্পীর নিজের। সংগীতায়োজনে এআর অ্যান্ড রায়। ভাওয়াইয়া ধাঁচের এ গানের ভিডিওতে নৃত্য পরিবেশন করেছেন একঝাঁক পাহাড়ি নৃত্যশিল্পী।

 

banner close
banner close