দেশে প্রতি বছরই বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা। নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি বছর আক্রান্তের এ হার প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। কম বয়সীদের মধ্যে মরণব্যাধি এ রোগের হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ১০ তলায়, ১০০ শয্যার স্ট্রোক ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৩৫ বছরের শ্রীকান্ত সাহা। তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রীকান্ত, গত ২১ অক্টোবর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ২২ অক্টোবর তাঁকে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও তা জানা ছিল না শ্রীকান্তের। গত সাত দিনেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।
শ্রীকান্তের মতো নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্ট্রোকে আক্রান্ত কম বয়সী রোগীর সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখযোগ্যহারে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই সময়মতো হাসপাতালে না পৌঁছায় বড় ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।
নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এস কে জাকারিয়া বিন সাঈদ বলেন, স্ট্রোকে যাদের ডিজিজ সিভিয়ারিটি বা মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি তাদেরকেই এই স্ট্রোক ইউনিটে ভর্তি করানো হয়।
নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা.হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, ‘যদি কারো মুধ বেঁকে যায়, হার্ট দুর্বল হয়ে যায় এবং কথায় যদি জড়তা আসে তাহলে আমরা মনে করি যে স্ট্রোক হয়েছে। সুতরায় এ লক্ষণগুলো দেখা গেলেই নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালের রোগীদের ওপর করা পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতি বছর দ্বিগুণ হারে বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যে কম বয়সীদের সংখ্যাই বেশি।’
প্রতিদিন এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে স্ট্রোকের সেবা নেন ৮০ থেকে ৯০ জন। যাদের অর্ধেককে ভর্তির প্রয়োজন হলেও শয্যা খালি না থাকায় পাঁচ থেকে সাত জনের বেশি ভর্তি সম্ভব হয় না। স্ট্রোকের বিষয়ে কমবয়সীদের মধ্যে সচেতনতা কম।
নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, ‘হাঁটা-চলা ছাড়া শুধু খাওয়া, অফিস আর রেস্ট নিলেই চলবে না। কম বয়সীদের মধ্যে এ প্রবণতা অনেক বেশি। এতে করে তারা হার্ট, লিভার ও কিডনি জটিলতায় ভুগছে বেশি।’
স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতি বছর মৃত্যু হয় এক লাখেরও বেশি মানুষের। আর আক্রান্ত হয় প্রায় ৩০ লাখ মানুষ।