বুধবার

২ এপ্রিল, ২০২৫
১৮ চৈত্র, ১৪৩১
৪ শাওয়াল, ১৪৪৬

এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ মার্চ, ২০২৫ ১৩:১৪

আপডেট: ১২ মার্চ, ২০২৫ ১৪:১২

শেয়ার

এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না: হাইকোর্ট
ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না

এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

তবে পাঁচ দফার সবগুলো দফা মেনে না নেওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবায় ফিরে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। তাদের দাবি, চিকিৎসকদের প্রতিটি দাবিই যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত। তারা এখন ডাক্তার না লিখলেও স্বাধীনভাবে আগের মতোই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে যাবে। এটি আমরা মেনে নেব না।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে হাইকোর্টের রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানরত চিকিৎসকরা এ কথা বলেন। 

ডা. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের ৫ দফার এক দফা পূরণ হয়েছে। ৫ দফা আদায় করতেই হবে। আপনারা কেউ চলে যাবেন না। আমরা এখান থেকে বাকি চার দফার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করব। আমাদের বাকি দফাগুলোর সমাধান না হলে আমরা ঘরে ফিরে যাব না।

‘পাঁচ দফার এক দফা পূরণ হয়েছে, এখনি সেবায় ফিরে যাব না’

এদিন রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ কর্মসূচিতে চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি হলো

১. এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এ ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। এরইমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তায় চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য যে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ডাক্তার সমাজের প্রতিবাদের মুখে ৭ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। যা আজ ৭ মাস পেরিয়েও কোনো আলোর মুখ দেখেনি। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

 

 

banner close
banner close