
বরাবরের মতো এবারো ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রোগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবার ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি। এই ছুটির সময়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় যাতে কোনো ধরনের ঘাটতি না দেখা দেয় সেই লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে হাসপাতালগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসাসেবা চালু রাখতে ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, জরুরি অস্ত্রোপচার, এক্সরে সেবা ও ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে জরুরি ল্যাব ও এক্সরে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অন–কল সেবাও চালু রাখতে হবে।
এ ছাড়া ছুটির সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আইভি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি–এজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুত ও সরবরাহের ব্যবস্থা করা, স্টোরকিপারদের নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করা, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষিণক চালু রাখা এবং হাসপাতালের বহির্বিভাগ একটানা তিন দিনের বেশি বন্ধ না রাখতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। নির্দেশনা অনুযায়ী, বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখতে হবে।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোগীদের শতভাগ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যায়ক্রমে ছুটি নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈদের ছুটি পাবেন। অনেকেই ঈদের পরে ছুটিতে যাবে। ঈদের সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কাজ করবেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বছর রমজানের ৩০টা রোজা হলে খ্রিষ্টীয় মাস অনুযায়ী ১ এপ্রিল হচ্ছে ঈদুল ফিতর। আর রোজা ২৯টি হলে ঈদ হচ্ছে ৩১ মার্চ। যেহেতু ঈদের ছুটি ২৮ মার্চ থেকে তাই রামেক হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মচারীরা শুক্রবার থেকে ঈদের ছুটিতে গেছেন। তাই ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা যাতে ভেঙে না পড়ে এবং রোগীরা যাতে শতভাগ চিকিৎসাসেবা পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসক, ইন্টার্ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকবেন কর্মস্থলে।
রামেক হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, হাসপাতালে শয্যার চেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নেয়। প্রতি বছর বিশেষ দিন হচ্ছে দুই ঈদ। এই ঈদের সময়ে হাজারো মানুষ হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে ঈদ করেন। কারণ অনেকের উপায় নেই। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ কাটাতে হয়। প্রতি ঈদে হাসপাতালে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়। এবাও তার ব্যতিক্রম নয়।
প্রতি ঈদে হাসপাতালে চিকিৎসক, ইন্টার্ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করে থাকেন। দুই ঈদে তাদের ছুটি পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়। সরকারি ছুটির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ল থেকে নির্দেশনা এসেছে, ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য পর্যায়ক্রমে ছুটির বিষয়ে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে ঈদের ছুটিতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক, ইন্টার্ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে কাজ করবেন। তাদের ছুটি পর্যায়ক্রমে নিশ্চিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: