
এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মধ্যে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে অকালে। জীবনধারার নানা দিক এর জন্য দায়ী। তারুণ্য ধরে রাখতে খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই জীবনধারা এমনভাবে সাজিয়ে তুলুন, যাতে সকালটা হয় ইতিবাচক। সকালের জন্য এমন খাবার এবং পানীয় বেছে নিন, যাতে আপনি থাকেন সজীব।
একটা বয়সের পর দেহে বার্ধক্যের কিছু ছাপ আসবেই। ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়লে তা আমরা দেখতে পাই। কিন্তু দেহের ভেতরের পরিবর্তনগুলো আমাদের চোখে পড়ে না। ত্বকসহ পুরো দেহেই তারুণ্য ধরে রাখতে আপনার চাই অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার। তাই রোজই প্রয়োজন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিংক ও সেলেনিয়াম। ত্বকের বলিরেখা এড়ানোর জন্য ভিটামিন সি আবশ্যক। কারণ, এটি কোলাজেন তৈরির জন্য প্রয়োজন। কোলাজেন এমন এক প্রোটিন, যা দিয়ে হয় ত্বকের গঠন। ত্বকের রোজকার ক্ষয়পূরণের জন্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের বিকল্প নেই। তারুণ্য ধরে রাখতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও কাজে আসবে। সেভাবেই গড়ে তুলুন খাদ্যাভ্যাস। এ সম্পর্কে পরামর্শ দিলেন রাজধানীর আজিমপুরের গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফাতেমা আকতার।
পানি এবং পানীয়
সকালে উঠে এক গ্লাস পানি খাওয়া দারুণ অভ্যাস। কেউ কেউ খালি পেটে পুরো এক গ্লাস পানি খেতে অসুবিধায় পড়তে পারেন। তাঁরা অন্তত আধা গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করলেও উপকার পাবেন।
সকালে খালি পেটে পানিতে বহু কিছু মিশিয়ে খাওয়ারও চল আছে। এই অভ্যাস মন্দ নয়। চিয়া সিড, তিসি, আদা—যা কিছু মিশিয়েই আপনি পানীয় তৈরি করুন না কেন, পানির উপকারটা ঠিকই পাবেন। বাড়তি হিসেবে যোগ হবে পানিতে মেশানো উপকরণের গুণ।
সকালের নাশতার পর কিছু কাজ সেরে যে সময়টায় ছোটখাটো একটা বিরতি নেওয়া হয়, সে সময় আপনি খেতে পারেন গ্রিন–টি। খালি পেটে কিংবা কোনো খাবার খাওয়ার পরপরই চা খাওয়া উচিত নয়। তাতে হজমের সমস্যা হতে পারে। কোনো খাবার খাওয়ার অন্তত মিনিট কুড়ি পর চা বা অন্যান্য পানীয় খাওয়া ভালো।
সবজি
বাহারি, রঙিন সবজি রাখুন সকালের নাশতায়। লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা রঙের শাকসবজি আর ফলে থাকে ভিটামিন এ। টমেটোর লাইকোপেনও তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। মৌসুমি সবজি বেছে নিতে পারেন সকালের নাশতায়। নানা রকম সবজি একসঙ্গে রান্না করতে পারেন। তবে যে সবজিই খাওয়া হোক না কেন, সবজির পরিমাণ যেন বেশি হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। গাজরসহ কিছু কাঁচা সবজির সালাদও খেতে পারেন সঙ্গে।
ফলমূল
সকালের খাদ্যতালিকায় অন্তত একটি-দুটি ফল রাখুন। টাটকা, দেশি ফল বেছে নেওয়া ভালো। আম, কাঁঠাল, লিচু, ডালিম, পাকা পেঁপে খেতে পারেন। আমলকী, আমড়া, পেয়ারা, জাম্বুরা কিংবা অন্য যেকোনো টক ফল খেতে চেষ্টা করুন। ফলের সালাদও খেতে পারেন। কিংবা খাবার খাওয়ার মিনিট কুড়ি পরে খেতে পারেন ফলের রস।
বাদাম ও অন্যান্য বীজ
নানা রকম বাদাম আর বীজ খেতে পারেন সকালের দিকেই। যেমন সকালে শরীরচর্চার আগে খানিকটা বাদাম আর বীজ খেয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিংবা নাশতার পর কিছু কাজ সেরে যে বিরতি নেওয়া হয়, সেই সময়টাতেও খেতে পারেন এই বাদাম ও বীজ। চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট—খেতে পারেন যেকোনোটি। পেট ভরবে, তৃপ্তিও হবে, তারুণ্য ধরে রাখা হবে সহজ।
ডার্ক চকলেট
এই যে বিরতির কথা বলা হচ্ছে, সে সময় আরও একটি জিনিস খেতে পারেন, তা হলো ডার্ক চকলেট। তবে খুব বেশি কিন্তু নয়। সামান্য একটু ডার্ক চকলেট খেলেই আপনার পেট ভরা থাকবে বেশ অনেকক্ষণ। তারুণ্য ধরে রাখতেও সাহায্য করবে অল্প পরিমাণ ডার্ক চকলেট।
আরও পড়ুন: