ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মোট ১২ জেলার ৭৭ উপজেলার ৪.৮ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আকষ্মিক এ বন্যায় ২ নারীসহ অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানানো হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের চলমান বন্যা সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘বন্যায় দেশের ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৮৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ ৪.৮ মিলিয়ন মানুষ। বন্যায় মারা গেছেন ১৫ জন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে ১ জন, চট্টগ্রামে ৪ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১ জন, লক্ষীপুরে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন।’
তিনি জানান, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা হচ্ছে ফেনী শহর ও জেলার ৬ উপজেলা। জেলার ৯০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার কাজ করছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় এই জেলার প্রায় সব এলাকা টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের উদ্ধার ও তাদের মাঝে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেছেন, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১৮৮ হাজার ৭৩৯ জন লোক ও ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৭টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে।
তিনি জানান, দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।
বন্যায় আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসককে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডের সদস্যরা, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে এক সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্ট গার্ড ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: