আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে ফোন করে হুমকি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে নিজের ভেরিভায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজেই পোস্ট দিয়েছেন গোলাম মাওলা।
পরিবর্তিত বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মাদ ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ক্ষমতার কারণে তিনি বিপদে পড়েছেন উল্লেখ করে রনি পোস্টে বলেন,'আজ নতুন বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী ডক্টর ইউনুসের সরকার এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারের ক্ষমতার মিলিত স্রোতে আমি একি বিপদে পড়লাম। আমার এখন কি করা উচিত?'
ওই পোস্টের শুরুতে গোলাম মাওলা অভিযোগ করেন, সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয়ে +8801858846051 নম্বর থেকে ফোন করে জনৈক ব্যক্তি গত কয়েক দিন তার ব্যক্তিগত সচিবকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন।
গতকাল দেয়া পোস্টে রনি আরও দাবি করেন, সেনা সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা তার সচিবের পাশাপাশি তাকেও হুমকি দিয়েছেন। ওই সেনা কর্মকর্তার আত্মীয়ের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দফা-রফা করতেই এই হুমকি দেয়া হয়েছে বলে জানান রনি।
গোলাম মাওলা রনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেও তার পোস্টে নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করে হুমকি পাওয়া নিয়ে লেখেন, 'আমি ব্যবসা করি সেই ১৯৯১ সাল থেকে। কোনো দিন সেনাবাহিনী, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ কিংবা সরকারি কোনো দপ্তর থেকে ইতিপূর্বে ফোন, তদবির বা হুমকি পাইনি।'
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে শুরুর দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতে থাকলেও ২০১৮ সালে দল পাল্টিয়ে বিএনপির মনোনীত পার্থী হিসাবে সংসদ নির্বাচন করেন গোলাম মাওলা।
বারবার রাজনৈতিক আদর্শ কিংবা মতাদর্শ বদলিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় দেশের নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ গোলাম মাওলার সমালোচনা করে আসছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে তার হুমকি পাওয়ার পোস্টেও অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। আলোচনায় থাকার জন্যই এমনটা করেছেন বলে ধারণা নেটিজেনদের।
মো. তারেক রহমান নামের একজন রনির পোস্টের মন্তব্যে লিখেছেন, ‘আপনি একজন লিজেন্ড। সবসময় বিরোধী হয়ে থাকতে চান।'
রনি তার পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুসকে দোষারোপ করে বার্তা দেয়ায়, অনেক নেটিজেনই ভালোভাবে নেয়নি বিষয়টি। ‘শাহবাগ চলে যান দাবি জানাতে’, 'বর্ডার পাড় হয়ে ভারত যান’, 'বাঁচতে চাইলে গোপালগঞ্জ চলে যান, কিছুদিন নিরাপদে থাকেন’, কমেন্টে এমনসব বিদ্রূপ করা হয়েছে তার পোস্টে।
রনির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ইতিবাচকের চাইতে এমনসব নেতিবাচক মন্তব্যই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
গোলাম মাওলা ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন পাননি। ২০১৫ সালে রনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এবং পরাজিত হন। দল পাল্টিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়নে নির্বাচন করেও হেরে যান গোলাম মাওলা রনি।
আরও পড়ুন: