ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব নেয়ার পরেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার।
দায়িত্ব নেয়ার মাত্র পাঁচদিনের মাথায় গত ১০ আগষ্ট ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেয়া হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না।
এতে ভারতের বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার বাজারগুলোতে ইলিশের সংকট প্রকট আকার ধারণ করতে শুরু করে এবং দাম কেজি প্রতি প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে বলে কলকাতাভিত্তিক দৈনিকগুলো জানিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিগত প্রায় দেড়যুগ ধরে এ দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার বেশি ছিল। মূলত প্রায় ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে ইলিশের সরবারহ স্বাভাবিক থাকায় এ দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু, হাসিনা সরকারের পতনের পর ঠিক উলটো চিত্র কলকাতার মাছের বাজারগুলোতে।
কলকাতার জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে বৈধ পথে আর ইলিশ আসার সুযোগ না থাকায় অবৈধ পথে পাচার করে আনা ইলিশ চড়া মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
কলকাতার বিখ্যাত গড়িয়াহাট বাজারের একজন পাইকারি মাছবিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, গোপন চ্যানেলে অবৈধভাবে মাছ ভারতে আসছে। এখন চাহিদার কারণে দাম অনেক বেশি।
অন্যদিকে, দিল্লির সিআর পার্ক মার্কেট-১ এর এক মাছবিক্রেতা জানান- তিনি এবং আরও অনেকে অবৈধভাবে ইলিশ এনে প্রতি কেজি তিন হাজার রুপিতে বিক্রি করছেন। দুর্গা পূজা আসছে, আর বাঙালি ক্রেতারা ইলিশ চায়। আমাদের তাদের চাহিদা মেটাতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক আমদানিকারক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘এমনিতে ত্রিপুরাসহ আসামের কাছাড় অঞ্চলে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বেশ কিছু ইলিশ আসে। ইতিমধ্যেই চোরাপথে আসা বাংলাদেশের ইলিশ চড়া দামে হলেও মানুষ তা কিনে খাচ্ছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বাংলাদেশের ইলিশ এ বার খুবই কম।
সামনে আসছে দুর্গাপুজোয় ইলিশের চাহিদা আরও বাড়লে এবং বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি বন্ধ থাকলে বেশি দাম দিয়েও মাছ খাওয়ার সুযোগ থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন কলকাতার ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: