বিশ্ব ইজতেমা সামনে রেখে তাবলীগ জামাতের একপক্ষের আমির মাওলানা সাদ ও তার অনুসারীদের বাংলাদেশে আসতে দেয়া হলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন ঘটানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাবলীগের অপরপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন তাবলীগ জামায়াতের ‘সাদবিরোধী’ পক্ষের নেতারা।
সম্মেলনে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘ইজতেমা ঘিরে ‘স্বঘোষিত আমির’ সাদ ও তার অনুসারীরা বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা এটি হতে দেব না। তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেওয়া হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। মনে রাখবেন, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বহু ওলামায়ে কেরাম শহিদ হয়েছেন। আমরা শাপলা চত্বরসহ আওয়ামী জালিম সরকারের বহু নির্যাতনের শিকার হয়েছি।’
এর আগে ভোরেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলনে আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে। সম্মেলনে যোগ দেওয়া জন্য ফজরের নামাজের পরপরই সেখানে আলেম-ওলামা ও মুসল্লি জমায়েত হন।
সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দাওয়াত-তাবলিগ, মাদারেসে কওমিয়া ও দ্বীনের হেফাজতের উদ্দেশে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গত রোববার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশের আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল নয়টায় ইসলামি মহাসম্মেলন হবে। এতে ওলামা-মাশায়েখ ও জনতাকে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, মাওলানা সাদ কান্ধলভির বেশকিছু বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এরপর নানা অসন্তোষের সত্ত্বেও ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশে আসেন তিনি। তখন এ নিয়ে বাংলাদেশে নানা তর্ক-বিতর্ক তৈরি হয়। মাওলানা সাদকে কোনোভাবেই ইজতেমায় অংশগ্রহনের সুযোগ দেয়া যাবে না বলে দাবি জানান ওলামায়ে কেরাম।
এসব দাবির মুখে ইজতেমায় অংশগ্রহণ না করেই কাকরাইল মসজিদ থেকে ভারতে চলে যান তিনি। এরপর থেকে তাকে আর বিশ্ব ইজতেমায় উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। যদিও প্রতিবার তাকে ইজতেমায় উপস্থিত করতে চেষ্টার কমতি রাখেন না তার অনুসারীরা। মাওলানা সাদকে ঘিরে বিরোধের কারণে ২০১৮ সাল থেকে আলাদাভাবে দুই পক্ষ তিন দিন করে ইজতেমার আয়োজন করা শুরু করে।
প্রায় এক শতাব্দি আগে মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি (রাহ.)-এর মাধ্যমে প্রচলিত দাওয়াত তাবলীগের সঙ্গে পরিচয় হয় মুসলমানদের। মহান এ জামাতের মেহনতের মাধ্যমে বহু পথভোলা, অন্ধকার পথের যাত্রী আলোর পথে ফিরে আসে। দাওয়াত ও তাবলীগ মুসলিম ও অমুসলিম সব দেশে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: