মঙ্গলবার

৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
০২ জামাদিউছ ছানি, ১৪৪৬

জিয়াউল আহসানকে ‘বসনিয়ার কসাই’ কারাজিচের সঙ্গে তুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১৫:০৩

শেয়ার

জিয়াউল আহসানকে ‘বসনিয়ার কসাই’ কারাজিচের সঙ্গে তুলনা
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাবেক মেজর জেনারেল ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে বসনিয়ার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের মতো হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তিনি জানান, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে হত্যা করার জন্যও জিয়াউল আহসান দায়ী।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জিয়াউল আহসানের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে শুনানিতে তাজুল ইসলাম তার কর্মকাণ্ডকে রাদোভান কারাদজিচের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন

আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণহত্যার অভিযোগে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক এনটিএমসি মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানসহ সাবেক ৮ কর্মকর্তার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর।

জিয়াউল আহসান বিভিন্ন সময় র‍্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন। সবশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের গুম, গুমের পরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যার পরে লাশ ডিসপোজাল করা, এসব কালচারের জনক ছিলেন। আওয়ামী সরকারের সময় যারা বিরোধী দলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছে তাদের তিনি একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছে, গুম করেছে, বছরের পর বছর আটকে রেখেছে। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেনি।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াসকে গুম করে হত্যা করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়াও নাম জানা-না জানা অনেক মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা ৯০-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার সারফিয়ান বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল যে ধরনের অত্যাচার করতো, তার সাথে আমরা তুলনা করেছি। ভলকানের কসাইয়ের মতো বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এই জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। 

এসময় তাজুল ইসলাম জানান, এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা আসামিদের প্রত্যেকের অপরাধ আদালতে তুলে ধরা হয়েছে। আদালত আগামী ১৯ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

ট্রাইব্যুনালে হাজির করা আট কর্মকর্তা হলেন— সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।

কে এই কারাজিচ

রাদোভান কারাদজিচ সাবেক বসনীয় সার্ব নেতা। বলকান অঞ্চলের হাজার হাজার নিরপরাধ মুসলিমকে গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে ‘বসনিয়ার কসাই’নামে পরিচিত তিনি। বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসা শহরে আট হাজার মুসলিম পুরুষ এবং বালককে হত্যার ঘটনায় তার ভূমিকার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনানিতে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচারক বলেন, কারাদজিচের তত্ত্বাবধানেই কার্যত এই শহরের মুসলিমদের ধ্বংস করার এক নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল।