বৃহস্পতিবার

৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
০৩ জামাদিউছ ছানি, ১৪৪৬

কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৯:০৫

শেয়ার

কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার
ছবি: বাংলা এডিশন

তিন বছর সাত মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। বুধবার বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে কারাগার থেকে বের হন তিনি। এ সময় কারাগারের গেটে বাবুল আক্তারের বর্তমান স্ত্রী ইশরাত জাহান মুক্তাসহ আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন বাবুল আক্তার।

তার কারামুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের জামিনের পর তা স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন তার সাবেক শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। বুধবার উচ্চ আদালত সেই আবেদনে সাড়া না দিলে তার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই। তাই সন্ধ্যায় তাকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কফিল উদ্দিন বলেন, বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে কারাগার থেকে একটি সাদা গাড়িতে করে বের হয়ে আসেন। তার ঢাকার বাসায় যাওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন স্থগিত চেয়ে শ্বশুর মোশাররফ হোসেন আবেদনে সাড়া দেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আজ বুধবার শুনানির পর ওই আবেদনে কোনো আদেশ দেননি বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত।

এতে করে হাইকোর্টের দেওয়া তার অন্তর্বর্তী জামিন বহাল থাকছে। বাবুল আক্তারের কারা মুক্তিতে আর কোনো বাধা না থাকায় তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বের হয়ে আসেন। 
এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর তার জামিনের কাগজপত্র চট্টগ্রাম কারাগারে এসে পৌঁছায়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় মুক্তি পাননি তিনি।

গত ২৭ নভেম্বর বাবুল আক্তারকে ছয় মাসের জামিন দেন বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ। বাবুল আক্তারকে কেন নিয়মিত জামিন দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নে রুল জারি করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত ১ ডিসেম্বর এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন মোশাররফ হোসেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার।

তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততার কথা জানায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে ছিলেন বাবুল।

এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

গত বছরের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।