
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যার মধ্যে প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়েছে ভিশন ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যাংকক ভিশন ২০৩০।
শনিবার বিমসটেকের প্রধান অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের অংশগ্রহণে ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, ২ এপ্রিল ২৫তম বিমসটেক উর্ধ্বতন সভা এবং ৩ এপ্রিল ২০তম বিমসটেক মন্ত্রিপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের মূল ফলাফলগুলো, ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণাপত্র গ্রহণ, যা নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত এবং নির্দেশনা প্রতিফলিত করে।
বিমসটেকের প্রথম ভিশন ডকুমেন্ট, ব্যাংকক ভিশন ২০৩০ গৃহীত হয়েছে, যা সমৃদ্ধ, সহিঞ্চুতা এবং উন্মুক্ত বিমসটেকের দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ভবিষ্যত সহযোগিতার জন্য একটি বিস্তৃত এবং বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রদান করে।
সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সামুদ্রিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরও বাণিজ্য এবং ভ্রমণ সক্ষম করবে।
বিমসটেক এবং ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যা আইওআরএ এবং বিমসটেকের মধ্যে ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়।
বিমসটেক এবং জাতিসংঘের মাদক অপরাধ নিয়ন্ত্রক অফিসের (ইউএনওডিসি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যা ইউএনওডিসি এবং বিমসটেকের মধ্যে অংশীদারিত্বকে ভাগাভাগি করবে।
বিমসটেক মেকানিজমের জন্য কার্যপ্রণালী গৃহীত। বিমসটেক সনদের সঙ্গে কার্যপ্রণালীর নিয়মাবলী, বিমসটেকের অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে, যা বৃহত্তর দক্ষতা এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।
বিমসটেকের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা সম্পর্কিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গোষ্ঠীর প্রতিবেদন গ্রহণ, যাতে বিমসটেককে সংস্কার ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ রয়েছে।
এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল মিন অং হ্লাইং, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ড. হারিনী আমারাসুরিয়া এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংটার্ন সিনাওয়াত্রা।
বিমসটেক নেতারা শীর্ষ সম্মেলনে তাদের বিবৃতিতে বিমসটেকের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আঞ্চলিক সহযোগিতার অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং উদ্যোগ উপস্থাপন করেছেন। তারা আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি বিনিময়, জলবায়ু কর্মকাণ্ড, সবুজ ও নবায়নযোগ্য শক্তি, টেকসই কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা বাড়াতে অগ্রগতি অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
বাংলাদেশের সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূস বিমসটেক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: