বুধবার

১৬ এপ্রিল, ২০২৫
৩ বৈশাখ, ১৪৩২
১৮ শাওয়াল, ১৪৪৬

মেঘলা আলমের পক্ষে সাংবাদিক মাসুদ কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১৪:৫৭

শেয়ার

মেঘলা আলমের পক্ষে সাংবাদিক মাসুদ কামাল
মেঘলা আলমের পক্ষে সাংবাদিক মাসুদ কামাল।

গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘলাকে হানিট্রাপের অভিযোগে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার নিজ বাসা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হয় মডেল মেঘলাকে।

গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে হানি ট্রাপের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিতের পর তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়। মেঘনা মেঘনা আলম সৌদি আরবের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ট্র্যাপে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবি করছিল বলে গোয়েন্দা তদন্তে উঠে আসে। দেশ ছাড়ার আগে সৌদি রাষ্ট্রদূত অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে বলেছেন, মেঘনা আলম এবং তার সংঘবদ্ধ চক্র তাকে হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিল। ওই ঘটনায় পুলিশ তৎপর হয় এবং তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পায় বলে জানা যায়। 

বিস্তারিত:  https://www.youtube.com/watch?v=8rFDkTvd7yw  

এছাড়াও মেঘনা আলমের কাজ ছিল বিভিন্ন কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে সেই তথ্য দেশবিরোধী একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেয়া। বিশ্লেষকদের ধারণা, তারা বিদেশি কোনো বাংলাদেশ বিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে বাংলাদেশে কাজ করে।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের সঙ্গেও মেঘনার ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক, আব্দুল মোমেন ও ওয়বায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছাড়াও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলের সঙ্গে মেঘনার ঘনিষ্ঠতার তথ্য-প্রমাণ এখন গোয়েন্দাদের হাতে।

জানা গেছে, মেঘনা আলম সেলিব্রিটি শোয়ের কথা বলে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনৈতিক পাড়ার বিভিন্ন উচ্চমহলের সঙ্গে মিশতেন। আর সেই মেশার সূত্র ধরে বিভিন্নভাবে নারী সরবরাহ ও দেহ ব্যবসার একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তিনি। ফলে আর্থিক সুবিধা, তথ্য পাচার, ভিসা তদবির এমনকি আদম পাচারের মতোও কাজও করত মেঘনা সিন্ডিকেট।

হানি ট্রাপার ও দেহব্যবসায়ী মডেল মেঘলাকে গ্রেফতারের পর বিষয়টি আলোচনায় আসলে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও সাংবাদিক মাসুদ কামাল এই মডেলের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন।

মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের সময় তিনি ফেসবুক লাইভে গিয়ে তার বাসায় পুলিশ এসেছে এবং তাকে গ্রেফতার করতে চান বলে জানান। তিনি সেসময় তার আইনজীবিকে নিয়ে থানায় যাওয়ার জন্য সময় চান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে। তবে মেঘলা আলম গ্রেফতারের পর একটি কুচক্রি মহল সেই লাইভ ভিডিও শেয়ার দিয়ে দাবী করেন মেঘনাকে অপহরণ করা হয়েছে।

ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ডিএমপি থেকে তাকে গ্রেফতারের বিষয় পরিষ্কার করতে একটি বিবৃতি দেয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ডিএমপির সেই পোস্টে নিয়ে সমালোচনা করতে দেখা যায় সাংবাদিক মাসুদ কামালকে। তিনি তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। যেখানে তিনি মেঘনা আলমের অপকর্মের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিতর্কিত করে মন্তব্য করেছেন

সেসময় মাসুদ কামাল হানি ট্রাপের অভিযগের পক্ষে বিপক্ষে কথা না বললেও দাবী করেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদিআরবের রাষ্ট্রদূত ঈসার সাথে মেঘনার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। যেটি নষ্ট হওয়ায় সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

তিনি সেসময় দাবী করেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হওয়ায় ঈসা ক্ষমতার প্রভাবে দেখিয়ে পুলিশ দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করিয়েছে।

এছাড়াও মাসুদ কামাল ভিডিওর পুরোটা সময় মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের ঘটনায় ডিবি পুলিশ ও আইন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে মেঘনা আলমকে নির্দোষ দাবী করেছেন।

মডেল মেঘনাকে আটকের প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনার মধ্যে শনিবার ডিএমপির ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সূত্র বলছে, মডেল মেঘনা আলম ইস্যুতে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরী নির্দেশ দেন ডিবিপ্রধানকে সরিয়ে দিতে।

মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যাকান্ডে ভারতের র’য়ের এজেন্ট ওসি প্রদীপকে সহায়তাকারী পুলিশের সাবেক এসপি আল্লাহ বকসের ছোট ভাই হলেন খোদা বকস চৌধুরী। আল্লাহ বকস মেজর সিনহা হত্যার পরও ওসি প্রদিপকে আইনী প্রক্রিয়ায় দায় এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।

হানি ট্র্যাপ খ্যাত মডেল মেঘনা ইস্যুতে ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে তার দায়িত্ব থেকে সরানোর ফলে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলছেন, সততা এবং দক্ষতা সঙ্গে আওয়ামীলীগের অনেক দুর্নীতিবাজ এমপি-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছেন এই রেজাউল করিম মল্লিক। ডিবি প্রধান ভারতের চোখ রাঙ্গানি পাশ কাটিয়ে ইসকনের স'ন্ত্রাসী চিন্ময়কে আ'টক করেছিলেন। তাই মেঘলার মতো আন্তর্জাতিক মানের দেহ ব্যবসায়ীর ইস্যুকে সামনে এনে ডিবি প্রধানকে বলি দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।

 

 

 

 

banner close
banner close