বুধবার

১৬ এপ্রিল, ২০২৫
৩ বৈশাখ, ১৪৩২
১৮ শাওয়াল, ১৪৪৬

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক আজ, শুধু নির্বাচন নয়, আরও অনেক বিষয়ে কথা বলবে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ ০৮:৪০

আপডেট: ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ ০৮:৪২

শেয়ার

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক আজ, শুধু নির্বাচন নয়, আরও অনেক বিষয়ে কথা বলবে বিএনপি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে শুধু জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথনকশার দাবি নয়, এ–সংশ্লিষ্ট আরও অনেক বিষয়ে কথা বলবে বিএনপি।

দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে বিএনপির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্ট করে জানতে চাইবেন কবে নাগাদ নির্বাচন হবে এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা কবে ঘোষণা করা হবে। উপদেষ্টার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পারলে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের নিয়ে আবার মাঠের কর্মসূচিতে যেতে পারে।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এ বৈঠক হবে। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা হয়। সেখানে বৈঠকের আলোচ্য সূচি এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণার দাবি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সরকারের উপদেষ্টাদের বিভিন্ন রকম বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সরকারের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কোনো প্রস্তুতি দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে, এখনো সংসদীয় আসনবিন্যাসের বিষয়টি মীমাংসা হয়নি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) আসন পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। বিষয়টি এখনো সেভাবেই পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করে। বর্তমান ইসি সেটি আবার নির্বাচন কমিশনের অধীন রাখার প্রস্তাব করে। এই প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদনও করে। কিন্তু এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনোই অগ্রগতি নেই।

এ ছাড়া বিএনপির নেতারা মনে করেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও সুবিধাভোগীরা এখনো বহাল আছে। এত দিন যাঁরা বৈষম্যের শিকার, তাঁদের এখনো পদায়ন করা হচ্ছে না। এ বিষয়গুলোও বৈঠকে তুলবে বিএনপি।

সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা মনে করছেন, নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টাসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টার বিভিন্ন রকম বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে স্পষ্ট হতে চাইবে।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, আগেরবারের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তাঁর সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তখন এ বক্তব্যে তাঁরা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তখনই তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছিলেন, প্রতিশ্রুত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এর পথনকশা যথাযথভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে, যাতে নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারে।

বিএনপির নেতাদের ভাষ্য, তখন প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়ে ‘দ্রুত’ নির্বাচন বা চলতি বছরের ‘জুন-জুলাইয়ের মধ্যে’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা থেকে বিএনপি সরে আসে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্যে তাঁর আগের অবস্থানের হেরফের দেখছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রতিক একাধিক বক্তব্য ও সাক্ষাৎকারে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। দলটি মনে করছে, নির্বাচন পেছানোর ভাবনায় ষড়যন্ত্র আছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ  বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তিনি সব কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এর ব্যতিক্রম কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ছাড়া নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টাদের কয়েকজনের যে বক্তব্য এবং সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের যে পোস্ট, তাতে করে মনে হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। বৈঠকে আমরা জানতে চাইব, তিনি কবে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেবেন, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের নির্দেশনা দেবেন।’

banner close
banner close