
মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে নিহত শ্রমিকদের স্মরণ করেছেন তাদের স্বজন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় সাভারের রানা প্লাজার সামনে অবস্থিত অস্থায়ী বেদিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে তারা কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বজন ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এরপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হচ্ছে—২৪ এপ্রিল জাতীয় শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা, রানা প্লাজার সামনে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি, রানা প্লাজার জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ও আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং হতাহত শ্রমিকদের এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, 'প্রতি বছর এই দিনে আমরা নিহতদের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। প্রতি বছরই আমরা একই দাবি তুলে ধরি। আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবির কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবিগুলো পূরণ করবে।'
রানা প্লাজার পঞ্চমতলায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন নিলুফার ইয়াসমিন। ভবন ধসের সাড়ে নয় ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। মেরুদণ্ড, পা ও মাথায় তিনি গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন। দীর্ঘ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, 'রানা প্লাজা ধস ছিল হত্যাকাণ্ড। আমরা ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও ভবন মালিকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের একটি দাবিও পূরণ হয়নি।'
'হাসিনা সরকারের পতনের পর আমারা স্বপ্ন দেখছিলাম, আমাদের দাবিগুলো পূরণ হবে। কিন্তু এই সরকারও আমাদের বিষয়ে কোনো আলোচনা করছে না। অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবিগুলো পূরণ করুক, এটাই চাই,' যোগ করেন তিনি।
নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে নিলুফার বলেন, 'আমার একটি পা বিকল হয়ে গেছে। স্বামী-সন্তান আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। রাস্তায় পান-সিগারেট বিক্রি করে কোনো রকম জীবন চালাচ্ছিলাম। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রোগ দেখা দিয়েছে। অসুস্থতার কারণে বাসায় বসে আছি। ওষুধ-খাবার কিনতে পারছি না। সহযোগিতা না পেলে আমি না খেয়ে মরে যাব।'
আরও পড়ুন: